কৃষক আন্দোলনের জয় হলো ভারতে।
দেশটির সংসদের উভয় কক্ষে বিনা আলোচনায় পাস হয়ে গেল কৃষি আইন প্রত্যাহার বিল। শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম দিনেই সংসদের দুই কক্ষেই পাস হয়ে গেল বিলটি।
বিরোধী দলগুলো এই বিল নিয়ে আলোচনার দাবি জানালেও ধ্বনি ভোটের মাধ্যমে তা নাচক হয়ে যায়।
সংসদের দুই কক্ষেই বিলটি পাস হয়ে যাওয়ায় আইন প্রত্যাহারের কাজ এক প্রকার শেষই হয়ে গেল।
বিল পাস হওয়ার পরই বিরোধীরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করায় রাজ্যসভার অধিবেশন স্থগিত করে দেয়া হয়েছে।
শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম দিনই কৃষি আইন প্রত্যাহার বিল পাস করা হবে, এ কথা আগেই জানা ছিল। কিন্তু বিরোধীদের দাবি ছিল, আইন প্রত্যাহারের বিল পাস করার আগে, তা নিয়ে আলোচনা করা হোক।
অধিবেশনের শুরুতেই সেই দাবি নিয়ে বিরোধীরা হই-হট্টগোল শুরু করে। তাদের শান্ত হতে বলার অনুরোধ করলেও বিরোধী সাংসদরা বিক্ষোভ জারি রাখেন। বাধ্য হয়ে লোকসভা দুপুর ১২টা অবধি স্থগিত করে দেয়া হয়।
ফের অধিবেশন শুরু হলে কৃষি আইন প্রত্যাহার বিল পেশ করেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমার। মাত্র চার মিনিটের মধ্যেই বিনা আলোচনায়, ধ্বনি ভোটের মাধ্যমে এই বিল লোকসভায় পাস করিয়ে দেয়া হয়।
বেলা দুইটোয় রাজ্যসভার অধিবেশন শুরু হলে কৃষিমন্ত্রী ফের একবার এই বিল পেশ করেন। বিরোধীরা আলোচনার দাবিতে সরব হওয়ার মাঝেই ধ্বনি ভোটের মাধ্যমে এই বিল রাজ্যসভাতেও পাস করিয়ে দেওয়া হয়।
রাজ্যসভার অধিবেশন শুরু হতেই লোকসভায় আলোচনা করতে না দেয়ার বিরোধিতা করে বিরোধী সাংসদরা। তবে রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান বিরোধীদের বক্তব্য পেশ করার জন্য বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গেকে দুই মিনিট সময় দেন।
লোকসভায় আলোচনা করার সুযোগ না পাওয়ার প্রসঙ্গে কংগ্রেস সাংসদ মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেন, ‘আমরা ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের আইনি গ্যারান্টি নিয়ে কথা বলতে চাই। কৃষক আন্দোলন চলাকালে যেসব কৃষক প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ ও লখিমপুর খেরির ঘটনা নিয়ে আমরা কথা বলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের সেই সুযোগ দেয়া হলো না।’
বিরোধীদের বিক্ষোভের জেরে মঙ্গলবার বেলা ১১টা পর্যন্ত লোকসভার অধিবেশন স্থগিত রাখা হয়েছে।
রাজ্যসভাতেও আইন প্রত্যাহারের বিল বিনা আলোচনাতেই পাস করানোর প্রসঙ্গে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেন, ‘আগেই আমরা সরকারকে আইন প্রত্যাহার করার অনুরোধ জানিয়েছিলাম। আজ সেই আইন প্রত্যাহার করা হল। তবে এটা অত্যন্ত দুঃখজনক যে, আলোচনা ছাড়াই আইন প্রত্যাহার করে নেয়া হলো।
‘এই সরকার আলোচনায় ভয় পায়। আসল সত্যিটা হল যে কৃষকরা দেশের মানুষদের প্রতিনিধি হিসাবে যে শক্তি হয়ে উঠে এসেছে, তার সামনে দাঁড়াতে পারছে না কেন্দ্রীয় সরকার।’
রাহুল বলেন, ‘বিভিন্ন রাজ্যে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের বিষয়টিও তাদোর মাথায় ঘুরছে। সেই কারণেই আইন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে তারা।’