আফ্রো-আমেরিকান রাজনীতিবিদ ও মুসলিম ধর্মীয় নেতা ম্যালকম এক্স-এর কন্যা মালাইকা শাবাজকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে।
স্থানীয় সময় সোমবার নিউ ইয়র্ক সিটির ব্রুকলিনে নিজের বাসভবনে মরে পড়ে ছিলেন মালাইকা।
নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, ৫৬ বছর বয়সী মালাইকা শাবাজ ছিলেন ম্যালকম এক্স ও বেটি শাবাজ দম্পতির কনিষ্ঠ কন্যা। মরদেহ উদ্ধারের পর প্রাথমিকভাবে সন্দেহজনক কোনো কিছুর অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি বলে দাবি করেছে মার্কিন পুলিশ। তবে ধারণা করা হচ্ছে, খাদ্যে বিষক্রিয়ার কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে।
মালাইকার মৃত্যু এমন একসময়ে হলো, যার চার দিন আগেই তার বাবাকে হত্যায় অভিযুক্ত দুই ব্যক্তিকে নির্দোষ বলে রায় দিয়েছেন এক বিচারক। ১৯৬৫ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি একটি জনসমাবেশে বক্তব্য দেয়ার সময় ম্যালকম এক্সকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল।
মার্কিন পুলিশ জানিয়েছে, ব্রুকলিনের মিডউড সেকশনের একটি বাসায় নিজের ২৩ বছর বয়সী কন্যাকে নিয়ে বসবাস করতেন মালাইকা। তার কন্যাই প্রথম মায়ের মৃতদেহ দেখতে পায়। শয়নকক্ষের মেঝেতে পড়ে ছিলেন মালাইকা। অনেক ডাকাডাকির পরও তিনি কোনো সাড়া দিচ্ছিলেন না।
মালাইকার মৃত্যু সম্পর্কে মঙ্গলবার নিউ ইয়র্কের মেয়র বিল ডি ব্লাসিও এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে কেউ তাকে হত্যা করেছে এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।’
তবে মালাইকার মৃত্যুকে ম্যালকম এক্স পরিবারের জন্য এক ‘ভয়াবহ’ খবর হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন ডি ব্লাসিও।
ম্যালকম এক্সকে হত্যা করার কয়েক মাস পর ১৯৬৫ সালে মালাইকা ও তার যমজ বোন মালাকের জন্ম হয়। মালাইকার মৃত্যু ম্যালকম এক্স পরিবারের ধারাবাহিক ট্র্যাজেডির সর্বশেষ ঘটনা। এর আগে ১৯৯৭ সালে তার মা বেটি শাবাজ আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা গিয়েছিলেন। পরে জানা যায়, শরীরে আগুন ধরিয়ে তাকে হত্যা করেছিল তারই ১২ বছর বয়সী নাতি ম্যালকম শাবাজ। এ অপরাধে ম্যালকম শাবাজকে পাঁচ বছর কিশোর সংশোধনাগারে কাটাতে হয়েছে। তবে ২০১৩ সালে মেক্সিকোর একটি বারে ২৮ বছর বয়সে সেই ম্যালকম শাবাজও নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হন।
১৯৯৯ সালে নিউ ইয়র্ক ছেড়ে নর্থ ক্যারোলিনায় গিয়ে বসবাস শুরু করেছিলেন মালাইকা। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তিনি ম্যারিল্যান্ডে বাস করছিলেন। তবে ঠিক কবে তিনি আবারও নিউ ইয়র্কে ফিরে এসেছিলেন তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। নিজের বোনদের সঙ্গে তার সম্পর্কটি ছিল বেশ জটিল। মায়ের একটি সম্পত্তি নিয়ে তাদের সঙ্গে দীর্ঘদিন আইনি লড়াই করেছেন তিনি।
২০১১ সালে ৭০ বছর বয়সী এক বিধবার অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ প্রমাণিত হয় মালাইকার বিরুদ্ধে। ওই বিধবার স্বামী মালাইকার বাবা ম্যালকম এক্স-এর দেহরক্ষী ছিলেন। এ ঘটনায় পাঁচ বছরের জন্য শুদ্ধি কার্ক্রমের মধ্যে থাকার রায় হয়েছিল মালাইকার বিরুদ্ধে।