সীমান্ত এলাকায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) ক্ষমতার আওতা বাড়ানোর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাস হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায়। এর ফলে পাঞ্জাবের পর দ্বিতীয় রাজ্যে হিসেবে এ রকম কোনো প্রস্তাব পাস করল পশ্চিমবঙ্গ।
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনে মঙ্গলবার বিএসএফের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সরব হন তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়করা।
তৃণমূলের আনা প্রস্তাবের আলোচনায় দলের বিধায়ক উদয়ন গুহ তুলেছেন গুরুতর অভিযোগ। তার দাবি, ‘তল্লাশির সময় নারীদের যৌনাঙ্গে হাত দেয় বিএসএফ।’
হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিএসএফকে ‘নৃশংস বাহিনী’ আখ্যায়িত করেন দিনহাটা থেকে নির্বাচিত বিধায়ক উদয়ন। তিনি বলেন, ‘সীমান্তে বিএসএফ নৃশংস নির্যাতন চালায়। কখনও ছেলের সামনে বাবাকে কান ধরে ওঠবস করায়। কখনও আবার নারীদের গোপনাঙ্গে হাত দিয়ে পরীক্ষা করে।’
অন্যদিকে তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায় বলেন, ‘বিএসএফ মানুষ মেরে কাঁটাতারে ঝুলিয়ে দেয়।’
তৃণমূল বিধায়কদের এমন কঠোর সমালোচনার পাল্টা সমালোচনা করেন বিজেপির সদস্যরা। দেশের কোনো বাহিনী নিয়ে এমন আলোচনা করা যায় কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তারা।
কেন্দ্রের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে বিজেপির বিধায়করা দাবি করেন, সীমান্তে দিন দিন চোরাচালান বাড়ছে। গরু পাচার ও অন্যান্য সামগ্রী পাচার নিয়ন্ত্রণের জন্য বিএসএফ পুলিশকে জানালেও তারা তৎপর হয় না। এ জন্যই তাদের এখতিয়ার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বিধানসভায় বিরোধী দলের নেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেন, ৫০ কিলোমিটারের পরিবর্তে বিএসএফের এখতিয়ার বাড়িয়ে ৮০ কিলোমিটার করা উচিত।
বিএসএফের ক্ষমতার আওতা বাড়িয়ে ১১ অক্টোবর একটি নোটিশ জারি করে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। এর ফলে পাঞ্জাব, পশ্চিমবঙ্গ আর অসমের আন্তর্জাতিক সীমান্তে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত ভারতীয় অংশে তল্লাশি, বাজেয়াপ্ত আর গ্রেপ্তার করার ক্ষমতা পেয়েছে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী। তবে এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছে তৃণমূল কংগ্রেস।
তৃণমূলের অভিযোগ, রাজ্য পুলিশের এলাকার মধ্যে গিয়ে কাজ করার ছাড়পত্র দেয়া হচ্ছে বিএসএফকে। এর ফলে রাজ্য পুলিশের এলাকার মধ্যে নাক গলাতে পারে বিএসএফ।
পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভায় মঙ্গলবার এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রস্তাব উত্থাপন করে তৃণমূল কংগ্রেস। তুমুল হট্টগোল ও আলোচনা শেষে প্রস্তাবটি ১১২ ভোটে পাস হয়, এর বিপক্ষে পড়েছে ৬৩ ভোট।