‘বিপজ্জনক ও দায়িত্বজ্ঞানহীনভাবে’ ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালানোর অভিযোগে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটনের অভিযোগ, আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস) অবস্থানরত নভোচারীদের বিপদের মুখে ফেলেছিল মস্কো।
সোমবার ছোড়া ওই ক্ষেপণাস্ত্রে রাশিয়ার নিজস্ব স্যাটেলাইটগুলোর একটি বিস্ফোরণে ধ্বংস হয়ে গেছে। ধ্বংসস্তুপের চাপে সে সময় আইএসএসের নভোচারীরা নিজ নিজ ক্যাপসুলে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমানে আইএসএসে সাতজন নভোচারী অবস্থান করছেন। এদের মধ্যে চারজন আমেরিকান, একজন জার্মান ও বাকি দুইজন রুশ নাগরিক।
কক্ষপথে ৪২০ কিলোমিটার উচ্চতায় পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করছে আইএসএস।
সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র বিভাগের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেন, ‘রাশিয়া বেপরোয়াভাবে ধ্বংসাত্মক স্যাটেলাইট পরীক্ষা চালিয়েছে। স্যাটেলাইটবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে নিজেদেরই একটি স্যাটেলাইট ধ্বংস করে দিয়েছে দেশটি।
‘এই পরীক্ষার ফলে বিধ্বস্ত স্যাটেলাইটটির কমপক্ষে দেড় হাজার বড় বড় টুকরো কক্ষপথে ঘুরছে, যেগুলো আমরা শনাক্ত করতে পেরেছি। আর কয়েক লাখ ছোট ছোট যেসব খণ্ড কক্ষপথে যুক্ত হয়েছে ধ্বংসস্তুপের কারণে, সেগুলোর তো কোনো হিসাবই নেই।’
রাশিয়ার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা রোজকসমস অবশ্য ঘটনাটিকে এত বড় করে দেখতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
সংস্থাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে জানায়, ‘কক্ষপথে ঘূর্ণায়মান বস্তুগুলোর কারণে আইএসএসের নভোচারীরা মহাকাশযানের ভেতরে অবস্থান নিয়ে নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাধ্য হয়েছিলেন। কিন্তু পরে সেগুলো আইএসএসের কক্ষপথ থেকে সরে গেছে। এখন আইএসএস সম্পূর্ণ নিরাপদ।’
১৯৮২ সালে মহাকাশে রাশিয়ার পাঠানো নজরদারিমূলক স্যাটেলাইট কসমস-১৪০৮-এর ধ্বংসস্তুপ এগুলো। এটির ওজন ছিল এক টনের বেশি। মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে অনেক আগেই কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছিল এটি।
এর আগে ২০০৭ সালে মেয়াদোত্তীর্ণ নিজেদের একটি স্যাটেলাইট ধ্বংস করে দিয়েছিল চীন। সেটির ধ্বংসস্তুপের প্রায় দুই হাজার শনাক্তযোগ্য খণ্ড কক্ষপথে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। সে সময় চলমান মহাকাশ অভিযানে সব দেশের জন্যই ঝুঁকি তৈরি করায় বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তোপের মুখে পড়েছিল চীন।