নতুন-পুরাতনের দ্বন্দ্ব আর কোন্দলে জর্জরিত পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দল বিজেপি। দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে এবার বিস্ফোরক অভিযোগ তুলে বহিষ্কৃত হলেন হাওড়া সদরের বিজেপি সভাপতি। আর দলে শুভেন্দুকে নিয়ে সমস্যার কথা স্বীকার করেও বহিষ্কারে সম্মতি দিয়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি দিলীপ ঘোষ।
বৃহস্পতিবার কলকাতা নিউ টাউন ইকো পার্কে প্রাতর্ভ্রমণে গিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন দিলীপ। তিনি বলেন, ‘শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে দলের মধ্যে অসন্তোষ আগে থেকেই ছিল। এর জন্য দল ছেড়ে অনেকে চলেও গেছেন। অনেকের মধ্যে সন্দেহ দানা বেঁধেছে। অনেকে অনেক রকম ধারণার বশবর্তী হয়ে ভুলভাল বকছেন। তবে অসন্তোষ থাকলেও ধীরে ধীরে তা স্বাভাবিক হচ্ছে।’
সম্প্রতি হাওড়া সদরের বিজেপি সভাপতি সুরজিৎ সাহা নারদা ঘুষকাণ্ডের প্রসঙ্গ তুলে শুভেন্দু অধিকারীর সততা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, ‘বিজেপির বি-টিমের অধীনে কাজ করব না। কে প্রকৃত বিজেপি তার সার্টিফিকেট শুভেন্দুর থেকে নেব না। আগে তিনি নিজের সততার প্রমাণ দেবেন। ৬ মাস দলে আসা নেতার থেকে বিজেপি করা শিখব না।’
শুভেন্দুকে ইঙ্গিত করে সুরজিৎ আরও বলেন, ‘রাজীব, মুকুল, সব্যসাচী বিজেপি ছেড়ে চলে গেছেন। এবার তিনি বিজেপিতে থাকবেন কি না চলে যাবেন- সেই সার্টিফিকেট বিজেপির কর্মীরা তার থেকে চায়।’
এই বক্তব্যের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সুরজিৎ সাহাকে দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয় বিজেপি। দলটির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘দলের বৈঠকের কথা বাইরে আনা নিয়মবহির্ভূত। তাই শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে সুরজিৎকে বহিষ্কার করা হয়েছে।’
সুরজিৎ সাহার বহিষ্কার প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘এটা ঠিক হয়েছে। দলের নিয়ম মেনে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। পার্টিতে শৃঙ্খলা ভাঙলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিষয়টা মিটে গেছে।’
বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি দিলীপ ঘোষ বিষয়টি মিটে গেছে বললেও পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে প্রত্যাশামতো ফল না করায় দলে যে অন্তর্দ্বন্দ্ব আর ভাঙন শুরু হয়েছে, তা যেন আর থামছেই না।