স্বাস্থ্যবান বিড়ালের শরীরের ব্যাকটেরিয়া এমন কিছু অ্যান্টিবডি উৎপাদন করতে পারে, যা জীবাণু ধ্বংসে সক্ষম। এসব অ্যান্টিবডি চর্মরোগ একজিমাও সারাতে পারে।
সম্প্রতি এক গবেষণা থেকে উঠে আসা তথ্য এমনটাই বলছে বলে জানিয়েছে সায়েন্স এলার্ট।
গবেষকদের ধারণা, মানুষসহ অন্যান্য প্রাণীদেহে সংক্রমণ চিকিৎসায় ওই সব অ্যান্টিবডি আগামী দিনে কাজে দেবে।
এ ধরনের চিকিৎসাপদ্ধতিকে ব্যাকটেরিওথেরাপি বলা হয়। এর মাধ্যমে উপকারী ব্যাকটেরিয়া ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এ পদ্ধতিতে অসুখ সারাতে বিজ্ঞানীরা তাদের গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
সাম্প্রতিক গবেষণায় বিজ্ঞানীরা ইঁদুরে থাকা মেথিসিলিন রেসিস্ট্যান্ট স্ট্যাফিলোকোক্কাস সিউডিনটেরমিডিয়াস বা এমআরএসপি প্যাথোজেনের বিরুদ্ধে বিড়ালের ব্যাকটেরিয়া ব্যবহার করেন।
গৃহপালিত প্রাণীর মধ্যে এমআরএসপি প্রায়ই পাওয়া যায়। তারা অসুস্থ বা আহত হলে এই ব্যাকটেরিয়া বিপুলসংখ্যায় বংশ বৃদ্ধি করে।
গবেষণার ফলে জানা যায়, বিড়ালে পাওয়া উপকারী ব্যাকটেরিয়া এমআরএসপির বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রতিরোধ গড়ে তোলে।
শুধু ইঁদুরের ক্ষেত্রেই নয়, মানবদেহেও এই ব্যাকটেরিয়া জীবাণুর বিরুদ্ধে সম্ভাব্য প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।
যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া স্যান দিয়েগোর চিকিৎসাবিজ্ঞানী রিচার্ড গ্যালো বলেন, ‘স্বাস্থ্যবান বিড়ালের সঙ্গে বসবাস করলে এমআরএসপির বিরুদ্ধে মানবদেহ কিছুটা সুরক্ষা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’
কুকুর, বিড়াল, মানুষসহ অন্যান্য প্রাণীদেহে একজিমার জন্য এমআরএসপিকে অনেকাংশে দায়ী করা হয়। এ রোগে সাধারণ অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ কাজ করে না। এটির চিকিৎসাও জটিল।
কুকুর ও বিড়ালে পাওয়া বেশ কয়েকটি ব্যাকটেরিয়া ল্যাবে এমআরএসপির সঙ্গে একসঙ্গে বাড়তে দেন গবেষণা দলটি। এর মাধ্যমে সহজে স্ট্যাফিলোকোক্কাস ফেলিস নামের একটি স্ট্রেইন শনাক্ত করতে পারেন গবেষকরা, যা এমআরএসপির বৃদ্ধি বন্ধ করে দেয়।
বিজ্ঞানীদের ধারণা, এমআরএসপি কোষের দেয়াল ভাঙতে প্রাকৃতিকভাবে স্ট্যাফিলোকোক্কাস ফেলিস উৎপাদিত অ্যান্টিবায়োটিকই যথেষ্ট।
চিকিৎসাবিজ্ঞানী গ্যালো বলেন, ‘স্ট্যাফিলোকোক্কাস ফেলিস প্রজাতির ব্যাকটেরিয়ার কার্যকারিতা অনেক বেশি। এটি প্যাথোজেন মেরে ফেলতে খুবই সক্ষম। কারণ এটি এমআরএসপি কোষকে বিভিন্ন দিক থেকে আক্রমণ করে।’