চলতি বছরের শুরুতেই বিশ্বের শীর্ষ ধনীর তালিকায় প্রথম স্থান দখল করেন ইলন মাস্ক।
সম্পত্তির পরিমাণ অবিশ্বাস্য দ্রুততায় বাড়তে থাকায় পৃথিবীর প্রথম ট্রিলিয়নিয়ারও হতে পারেন স্পেসএক্সের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বহুজাতিক বিনিয়োগ ব্যাংক ও আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান মরগ্যান স্ট্যানলি দিয়েছে এমন আভাস।
মরগ্যান স্ট্যানলির বরাত দিয়ে ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে জানানো হয়, মহাকাশযান নির্মাতা ও মহাকাশযাত্রা সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্সের কল্যাণে নজিরবিহীন সাফল্য পেতে পারেন মাস্ক।
পরিবেশবান্ধব জ্বালানি ও বিদ্যুৎচালিত গাড়িনির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার অপ্রত্যাশিত ঊর্ধ্বগতি মাস্ককে বিশ্বের শীর্ষ ধনী করেছে।
মরগ্যান স্ট্যানলির হিসাব অনুযায়ী, স্পেসএক্সের কল্যাণে বিশ্বের প্রথম ব্যক্তি হিসেবে মাস্কের মালিকানাধীন সম্পত্তির আর্থিক মূল্যমান ১৩ ডিজিটে পৌঁছাবে।
প্রথমবারের মতো মহাকাশকেন্দ্রিক পর্যটন ও বেসরকারিভাবে মহাকাশ ভ্রমণের সেবা দিয়ে রেকর্ড গড়েছে স্পেসএক্স।
মরগ্যান স্ট্যানলির গবেষক ও বিশ্লেষক অ্যাডাম জোনাস মঙ্গলবার এক নোটে লিখেন, ‘মহাকাশযান নির্মাণ, উৎক্ষেপণ ও সহায়ক অবকাঠামোর প্রশ্নে সম্ভাবনা আর সম্ভাব্য সময় নিয়ে বর্তমান মানবজাতির যত পূর্বধারণা রয়েছে, তার সবগুলোকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে স্পেসএক্স।
‘যে দ্রুততায় স্পেসএক্স এসব অসম্ভবকে সম্ভব করছে, সে গতি ছোঁয়ার সাধ্য কার আছে?’
ব্লুমবার্গের বিলিয়নিয়ার সূচক অনুযায়ী, বর্তমানে মাস্কের সম্পত্তির মূল্য ২৪ হাজার ১০০ কোটি ডলার। এই অর্থের প্রায় ১৭ শতাংশ আসে স্পেসএক্স থেকে।
জোনাস লিখেন, এক স্পেসএক্স আসলে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সমাহার। এটি মহাকাশে অবকাঠামো নির্মাণ, পৃথিবী প্রদক্ষিণ, মহাবিশ্বের অচেনা অঞ্চলে ভ্রমণসহ অসংখ্য সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে। এর কল্যাণে তালিকায় যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন খাত।
জোনাসের মতে, স্যাটেলাইটভিত্তিক যোগাযোগ ব্যবসা স্টারলিংক বর্তমানে স্পেসএক্সের সবচেয়ে বড় প্রকল্প।
টেসলা পুঁজিবাজারে আগের চেয়েও বেশি শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছে যাওয়ায় চলতি বছর মাস্কের ঝুলিতে যোগ হয় ছয় হাজার কোটি ডলারের বেশি সম্পত্তি। আর সম্প্রতি স্পেসএক্সের কিছু শেয়ার বিক্রি করেন তিনি, যার মূল্য ১০ হাজার কোটি ডলার।
ব্লুমবার্গের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার সঙ্গে সাম্প্রতিক চুক্তির মাধ্যমে আরও এক হাজার ১০০ কোটি ডলার যুক্ত হয়েছে স্পেসএক্সের ঝুলিতে।
বিশ্বের শীর্ষ ধনী হয়েও অগ্রযাত্রায় থেমে যাননি ইলন মাস্ক। চলতি সপ্তাহেই নতুন একটি রেকর্ড গড়েন তিনি।
বিশ্বের শীর্ষ ১০ ধনকুবেরের তালিকায় থাকা উল্লেখযোগ্য দুই ব্যক্তি বিল গেটস ও ওয়ারেন বাফেটের সম্পত্তির সমপরিমাণ ঝুলিতে পুরেন মাস্ক একাই।
শীর্ষ ধনীর তালিকায় চতুর্থ অবস্থানে থাকা মাইক্রোসফটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা গেটসের সম্পত্তির মূল্য ১৩ হাজার কোটি ডলার। দশম অবস্থানে থাকা বার্কশায়ার হ্যাথওয়ের প্রধান নির্বাহী বাফেটের আছে ১০ হাজার কোটি ডলারের সম্পত্তি। দুটির যোগফলকেও ছাড়িয়ে গেছে মাস্কের সম্পত্তি।
২০১৭ সাল থেকে বিশ্বের শীর্ষ ধনীর অবস্থানটি ধরে রেখেছিলেন সর্ববৃহৎ অনলাইন মার্কেটপ্লেস অ্যামাজনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জেফ বেজোস। চলতি বছরের জানুয়ারিতে বেজোসকে ছাড়িয়ে শীর্ষ ধনী হন মাস্ক।
বর্তমানে শীর্ষ ধনীর তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা বেজোসের সম্পত্তির পরিমাণ ১৯ হাজার কোটি ডলারের বেশি। অর্থাৎ সম্পত্তির দিক থেকে মাস্কের ধারেকাছেও নেই বেজোস, গেটস বা বাফেট।