নরওয়ের সুপার মার্কেটে তির ও ধনুক দিয়ে হামলা চালানো সন্দেহভাজন ড্যানিশ ব্যক্তি ধর্মান্তরিত মুসলমান। ওই ব্যক্তি উগ্রপন্থার দিকে ঝুঁকতে পারেন বলে পুলিশের শঙ্কা ছিল।
নরওয়ের কর্মকর্তারা বৃহস্পতিবার এসব তথ্য জানান বলে বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
নরওয়ের রাজধানী অসলোর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর কংসবার্গে স্থানীয় সময় বুধবার সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে এক ব্যক্তি তির ও ধনুক দিয়ে হামলা চালান।
ওই হামলায় পাঁচজন নিহত ও দুজন আহত হন। নিহতদের মধ্যে চার নারী ও এক পুরুষ। তাদের প্রত্যেকের বয়স ৫০ থেকে ৭০-এর মধ্যে।
নরওয়ের পুলিশ কর্মকর্তা ওলে ব্রেডরাপ সাভেরুড সাংবাদিকদের বলেন, ‘ড্যানিশ ব্যক্তিটি একাই হামলা চালিয়েছেন, তা আমরা মোটামুটি নিশ্চিত। এটি সন্ত্রাসী হামলা কি না, তা আমরা তদন্ত করছি।’
নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী এরনা সোলবার্গ জানান, হামলার ওই ঘটনা ‘আতঙ্কজনক’।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘অনেক মানুষ এ ঘটনায় ভয় পেয়েছে, তা বুঝতে পারছি। তবে তাদের এটি জানা জরুরি, দেশের নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’
কংসবার্গ শহরের পশ্চিমে কুপ এক্সট্রা নামের সুপার মার্কেটের ভেতর ৩৭ বছর বয়সী ওই ড্যানিশ ব্যক্তি হামলা চালান। হামলায় আহতদের মধ্যে একজন অফ-ডিউটিতে থাকা পুলিশ কর্মকর্তা ছিলেন।
নিজেদের দোকানের ‘ভয়াবহ ঘটনা’ সম্পর্কে কুপ এক্সট্রার এক মুখপাত্র জানান, তাদের কোনো কর্মী ওই হামলায় আহত হননি।
খবর পেয়ে পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছার পর হামলাকারীর সঙ্গে তাদের ধস্তাধস্তি হয়। পৌনে ৭টার দিকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর হামলাকারীকে ড্রামেন শহরের একটি থানায় নেয়া হয়।
বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রত্যক্ষদর্শীদের মধ্যে একজন স্থানীয় সংবাদমাধ্যম টিভিটুকে জানান, সুপার মার্কেটে কেনাকাটার একপর্যায়ে গন্ডগোলের শব্দ পান তিনি। এক নারীকে ওই সময় আত্মরক্ষা করতে দেখেন তিনি। এরপরই মার্কেটটির এক কর্নারে কাঁধে তিরসহ তূণীর ও ধনুক হাতে এক ব্যক্তিকে দেখা যায়।
তিনি বলেন, ‘ওই ব্যক্তিকে দেখে প্রাণ বাঁচাতে মানুষজনকে এদিক-ওদিক দৌড়াতে দেখি। তাদের মধ্যে শিশু হাতে এক নারীও ছিল।’
ঘটনার সময় হামলাকারী অন্য কোনো অস্ত্র ব্যবহার করেছিল কি না, তা পুলিশ খতিয়ে দেখছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।
হামলার পরপরই অ্যাম্বুলেন্স, পুলিশের গাড়ি, হেলিকপ্টারসহ বেশ কয়েকটি যানবাহনকে ঘটনাস্থলে যেতে দেখা যায়।
নরওয়ের বিচারমন্ত্রী মনিকা মেল্যান্ড ঘটনাটি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন বলে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
নরওয়েজুড়ে সব পুলিশ কর্মকর্তাকে অতিরিক্ত সতর্কতার অংশ হিসেবে আগ্নেয়াস্ত্র বহন করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
নরওয়ের পুলিশ বাহিনী সাধারণত কোনো অস্ত্র বহন করে না।
দেশটির পুলিশ বিভাগ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকিমূলক কোনো তথ্য এখন পর্যন্ত পুলিশের কাছে নেই।