গোখরা সাপের কামড় খাইয়ে স্ত্রীকে হত্যার অপরাধে এক স্বামীকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছিল ভারতে, প্রায় দেড় বছর আগে।
বিবিসির বুধবারের প্রতিবেদনে বলা হয়, একই ব্যক্তিকে জোড়া আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়ার ঘটনা ভারতে নজিরবিহীন। দুই দিন আগে এমনটাই ঘটেছে দক্ষিণের রাজ্য কেরালায়।
স্ত্রী উথ্রাকে হত্যার অভিযোগে গত বছর সুরাজ কুমারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সাপের কামড়ে মৃত্যু হয়েছিল উথ্রার।
উথ্রার মা-বাবার সন্দেহের ভিত্তিতে এ মৃত্যুর ঘটনায় অনুসন্ধান শুরু করে পুলিশ। নিহত উথ্রার পরিবারের অভিযোগ ছিল, যৌতুকের জন্য তাদের মেয়ের ওপর নির্যাতন চালাতেন স্বামী সুরাজ।
এ ঘটনায় গত সোমবার সুরাজকে দোষী সাব্যস্ত করে রায় দেয় আদালত। জানা যায়, উথ্রা ঘুমিয়ে থাকার সময় তার বিছানায় একটি বিষধর গোখরা সাপ ছেড়ে দিয়েছিলেন তার স্বামী।
২৫ বছর বয়সী গৃহিণী উথ্রাকে গত বছরের মে মাসে নিজ বাড়িতে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
মেয়ের মৃত্যুতে তার পরিবারের সদস্যরা সন্দেহ করতে শুরু করেন যে এটি স্রেফ দুর্ঘটনা নয়। কারণ এক সপ্তাহের ব্যবধানে দ্বিতীয়বার সাপের কামড়ে মৃত্যু হয় উথ্রার।
গোখরার কামড়ে মৃত্যুর আগের সপ্তাহেই বিষাক্ত রাসেলস ভাইপার সাপের কামড়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন উথ্রা। সাপের প্রথম কামড়ের অসুস্থতা থেকে সুস্থ হতে না-হতেই দ্বিতীয়বার সাপের কামড় খান তিনি।
পুলিশ জানিয়েছে, দুটি সাপের কামড়ই সুরাজের হত্যা পরিকল্পনার অংশ ছিল বলে অনুসন্ধানে প্রমাণ মিলেছে।
সাপ সংগ্রহে সুরাজকে সহযোগিতা করায় আরেক ব্যক্তিকেও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ওই ব্যক্তিই পরে পুলিশকে হত্যা মামলার তথ্যপ্রমাণ খুঁজে বের করতে সাহায্য করেন।
ভারতের আইনবিষয়ক ওয়েবসাইট লাইভলর তথ্য অনুযায়ী, পুলিশ এ বিষয়ে এক হাজার পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র দাখিল করেছে। এতে সুরাজের ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনা থেকে বাস্তবায়ন পর্যন্ত পুরো ঘটনাই নথিবদ্ধ করা হয়েছে।
মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবীদের মতে, অপরাধজগতে ‘এটি বিরলতম ঘটনা’ এবং এ ঘটনায় অভিযুক্তের মৃত্যুদণ্ডও দাবি করেছিলেন তারা।
এটি ‘বিরল ঘটনা’ বলে সম্মত হলেও আদালত অপরাধীকে সর্বোচ্চ সাজা দেয়া থেকে বিরত থেকেছে এবং জোড়া আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছে। একই সঙ্গে সুরাজকে পাঁচ লাখ রুপি জরিমানাও করা হয়েছে।