পারমাণবিক জ্বালানিনির্ভর নীতি গ্রহণের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেছেন জাপানের নতুন প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা। পার্লামেন্টে বিরোধী দলের প্রশ্নের জবাবে সোমবার তিনি বলেন, ‘পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র পুনরায় চালু করা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১১ সাল থেকে বন্ধ ফুকুশিমা পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র পুনরায় চালু করার ওপর জোর দিয়েছেন কিশিদা।
গত মাসে জাপানে ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) দলীয় নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী পরিবর্তন হয়। ওই নির্বাচনের সময় থেকেই জ্বালানি ইস্যুতে আলোচনা নতুন মাত্রা পেয়েছে দেশটিতে। পরমাণু বিদ্যুতের বিপক্ষে অবস্থান নেয়া সাবেক মন্ত্রী তারো কোনোর বিপরীতে ওই নির্বাচনে জয় পান কিশিদা।
গত সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব নেন কিশিদা। এরপর আজ প্রথম পার্লামেন্টে বিরোধী দলের প্রশ্ন গ্রহণ করেন তিনি।
নবায়নযোগ্য জ্বালানি ইস্যুতে সরকারের পরিকল্পনা এবং পরমাণু বিদ্যুৎ সে পরিকল্পনার অংশ হবে কি না জানতে চেয়েছিলেন প্রধান বিরোধী দল কনস্টিটিউশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি অফ জাপানের (সিডিপিজে) নেতা ইয়ুকিও ইদানো।
এর জবাবে ফুকুশিমা পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র পুনরায় চালু করার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী কিশিদা।
পরমাণু বিদ্যুৎ নিয়ে বিতর্কের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে জাপানের; বিশেষ করে ২০১১ সালে ফুকুশিমা পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকে।
১০ বছর আগে শক্তিশালী ভূমিকম্প ও সুনামিতে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয় ফুকুশিমা পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র। টোকিওর উত্তরে অবস্থিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে ওই বিপর্যয় বিশ্বের সবচেয়ে বড় পারমাণবিক দুর্ঘটনাগুলোর একটি।
এ বিপর্যয়ের পরই জাপানের সবগুলো পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়। কেন্দ্রগুলো নিয়মিত তত্ত্বাবধান ও ব্যবস্থাপনায় প্রশাসনিক ব্যর্থতার অভিযোগে নেয়া হয় ওই পদক্ষেপ। এরপর হাতেগোনা কয়েকটি পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র পুনরায় সচল হলেও বন্ধই থেকে গেছে বেশিরভাগ।
আগামী ৩১ অক্টোবর জাপানে সাধারণ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। প্রধানমন্ত্রী কিশিদার নেতৃত্বেই ভোটে অংশ নিচ্ছে ক্ষমতাসীন এলডিপি। প্রতিনিধি বাছাইয়ে ভোটাররা প্রাধান্য দিচ্ছেন করোনাভাইরাস মহামারি নিয়ন্ত্রণ ও অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের বিষয়ে।
মহামারির পঞ্চম ও সবচেয়ে প্রাণঘাতী ধাক্কার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে জাপান। ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত রোগী নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে বেশিরভাগ হাসপাতাল। অবশ্য গত কয়েকদিনে সংক্রমণের হার কমতে শুরু করেছে।