আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহার ও তালেবানের ক্ষমতা দখলের পর প্রথমবারের মতো গোষ্ঠীটির জ্যেষ্ঠ প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে যাচ্ছে ওয়াশিংটনের একটি প্রতিনিধিদল। কাতারের রাজধানী দোহায় শনি ও রোববার উচ্চপর্যায়ের এ বৈঠক হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের জ্যেষ্ঠ দুই প্রশাসনিক কর্মকর্তার বরাতে এসব তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
ওই দুই কর্মকর্তা জানান, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডি ও গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা থাকবেন।
আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকসহ অন্যদের নিরাপদে দেশে ফেরা এবং অপহৃত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক মার্ক ফ্রেরিকসের মুক্তির বিষয়টি বৈঠকে প্রাধান্য পাবে বলে ওই কর্মকর্তারা জানান।
এ ছাড়া গত বছর স্বাক্ষরিত দোহা চুক্তিতে তালেবান আফগানিস্তানের সন্ত্রাসী সংগঠনের বিষয়ে যে অঙ্গীকার করেছিল, তা মানতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল কট্টর ইসলামপন্থি গোষ্ঠীটিকে বলবে।
ওই অঙ্গীকার অনুযায়ী, আল-কায়েদাসহ অন্যান্য সন্ত্রাসী সংগঠনকে আফগানিস্তানের মাটিতে ফের তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে দেবে না তালেবান।
পাশাপাশি অর্থনীতি থুবড়ে পড়া আফগানিস্তানে মানবিক সহায়তা দেয়ার ব্যবস্থা উন্নত করতেও বৈঠকে তালেবানের প্রতি আহ্বান জানাবে যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে দীর্ঘদিন ধরে তালেবান নেতাদের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় অংশ নেয়া বিশেষ প্রতিনিধি জালমে খলিলজাদ এবারের বৈঠকে থাকছেন না বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলে অন্যদের মধ্যে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি বিশেষ প্রতিনিধি টম ওয়েস্ট, ইউএসএআইডির শীর্ষ কর্মকর্তা সারাহ চার্লস রয়েছেন। আর তালেবানের পক্ষে থাকছেন আফগানিস্তানের মন্ত্রিসভার কয়েকজন কর্মকর্তা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যুক্তরাষ্ট্রের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা বলেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় স্বার্থ সম্পর্কিত আলোচনার ধারাবাহিকতায় দোহায় বৈঠকটি হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘তালেবানকে স্বীকৃতি বা বৈধতা দেয়ার জন্য এ বৈঠক হচ্ছে না।
‘আমরা বারবার বলে এসেছি, তালেবানের কর্মকাণ্ডের ওপরই তাদের বৈধতা বা স্বীকৃতি দেয়া নির্ভর করছে।’
আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের ২০ বছরের যুদ্ধ শেষে চলতি বছরে আগস্টের শেষ সপ্তাহে তাড়াহুড়ো করে নাগরিকদের দেশে ফেরায় ওয়াশিংটন।
ওই সময় ১ লাখ ২৪ হাজারের বেশি মার্কিন, আফগানসহ অন্যান্য দেশের বেসামরিক নাগরিক আফগানিস্তান ছাড়তে পারলেও যুদ্ধকালে যুক্তরাষ্ট্রকে সহযোগিতা করা হাজার হাজার আফগান এখনও দেশটিতে রয়ে গেছেন। দেশত্যাগ করতে না পারা আফগানরা তালেবানের প্রতিহিংসার শঙ্কায় রয়েছেন।