পূজামণ্ডপে বিভিন্ন সময় প্রাধান্য পেয়েছে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা। এবার কলকাতার শ্রীভূমিতে নির্মাণ করা হয়েছে আরবের বুর্জ খলিফার আদলে সুউচ্চ এক মণ্ডপ।
দুই বছর আগে কলকাতার বেলেঘাটায় দুর্গাপূজার মণ্ডপে বেজে ওঠে আজানের সুর। এ নিয়ে শুরু হয় তর্কবিতর্ক ও নানা মহলে অসন্তোষ। তবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পক্ষের শক্তি যুক্তি দেখায় কোনো ধর্ম কখনোই অন্য ধর্মের মানুষকে আঘাত করার শিক্ষা দেয়নি। তাই মণ্ডপের আয়োজকরা জানান, এ ভাবনা থেকেই বেলেঘাটায় মণ্ডপ নির্মাণ করা হয়।
বেলেঘাটার পূজামণ্ডপে সনাতন ধর্ম ছাড়াও অন্য ধর্মের রীতিনীতি এবং ছবি ব্যবহার করা হয়। সেখানে একটি দৃশ্য সবার নজর কাড়ে। সেখানে দেখা যায় একটি বড় ছাতা, যার নিচে রয়েছে মন্দির, মসজিদ ও গির্জা। আবার দুর্গা প্রতিমার হাতে দেয়া হয়নি কোনো অস্ত্র।
পশ্চিমবঙ্গের দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুর শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবের পূজাতে প্রতিবছর চমক থাকে। কোনো বছর বাহুবলী, কোনো বছর পদ্মাবতী, মৌর্য সাম্রাজ্যের সমৃদ্ধ মন্দির, স্থাপত্যসহ বিভিন্ন নিদর্শন স্থান পায় শ্রীভূমির দুর্গাপূজার মণ্ডপ নির্মাণের থিমে।
মন্ত্রী সুজিত বসু বলেন, ‘পৃথিবীর বিভিন্ন স্থাপত্যের আদলে আমরা মণ্ডপ নির্মাণ করি। প্রতিবছর নতুন কিছু দর্শনার্থীদের দেয়ার চেষ্টা থাকে। এর আগে আমরা প্যারিস অপেরা, কেদারনাথ, পুরীর মন্দির তৈরি করেছি। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে গুরুত্ব দিয়ে এবার আরবের বুর্জ খলিফার আদলে নির্মাণ করেছি মণ্ডপ।’
পৃথিবীর উচ্চতম অট্টালিকা দুবাইয়ের বুর্জ খলিফার উচ্চতা ২ হাজার ৭১৭ ফুট। ২০১০ সালের জানুয়ারিতে এটির উদ্বোধন হয়।
মণ্ডপের প্রধান কারিগর রোমিও হাজরা জানান, ২৫০ জন কর্মী দুমাস ধরে কাজ করেছেন। ১৪০ ফুটের মতো উচ্চতার মণ্ডপটি ধাপে ধাপে তৈরি হয়েছে। মণ্ডপ তৈরিতে বিভিন্ন ধরনের আয়না ব্যবহার করা হয়েছে।’
শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক দিব্যেন্দু কিশোর গোস্বামী বলেন, ‘মণ্ডপে বিশেষ ধরনের আলো লাগানো হয়েছে। ফলে তার আলাদা একটা এফেক্ট আছে। মণ্ডপটি এতটাই অনুকরণ করে তৈরি হয়েছে যে, রাতে বিশেষ আলোতে বুর্জ খলিফার মতো দেখাবে। কলকাতা না দুবাই আছেন বুঝতে পারবেন না।’
শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবের মণ্ডপ ও প্রতিমা দেখতে যারা আসবেন, তাদের অবশ্যই কঠোরভাবে করোনা বিধি মানতে হবে বলে উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
পৃথিবীর উচ্চতম অট্টালিকা বুর্জ খলিফা দেখার জন্য দুবাই যাওয়ার দরকার হবে না। দুর্গাপূজায় কলকাতার লেকটাউন শ্রীভূমির পূজাতে এলে দেখা যাবে বুর্জ খলিফার আশ্চর্য সৌন্দর্য, এমন দাবি উদ্যোক্তাদের।