এশিয়ার সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি মুকেশ আম্বানির ভাই ব্যবসায়ী অনিল আম্বানি, কিংবদন্তি ক্রিকেটার শচীন টেন্ডুলকার, কংগ্রেসের নেতাসহ ৩০০ এর বেশি ভারতীয়র নাম রয়েছে প্যান্ডোরা পেপার্সে।
ভারতের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
বিশ্বের ধনী ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের গোপন সম্পদ, আর্থিক লেনদেন, কর ফাঁকি ও অর্থ পাচারের ১ কোটি ২০ লাখ নথি রোববার ফাঁস করে প্যান্ডোরা পেপার্স।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অফ ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টসের (আইসিআইজে) কাছে আর্থিক লেনদেনের ওই সব নথি আসে।
প্রায় দুই বছর ধরে ১১৭টি দেশের ৬০০ এর বেশি সাংবাদিক নথিগুলো বিশ্লেষণ করেন। ১৪০টির বেশি সংবাদমাধ্যম আইসিআইজের এই অনুসন্ধানী কাজে যুক্ত। আইসিআইজের এই বৈশ্বিক অনুসন্ধানী কাজে রয়েছে ভারতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসও।
তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়, পলাতক ব্যবসায়ী নিরব মোদির বোন এবং বিওকন লিমিটেডের নির্বাহী প্রধান ও ধনকুবের কিরণ মজুমদার-শ’র নামও প্যান্ডোরা পেপার্সে রয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্যান্ডোরা পেপার্সে থাকা ৩০০ এর বেশি ভারতীয়র মধ্যে ৬০ জনের অফশোর হোল্ডিং ও কোম্পানি নিয়ে অনুসন্ধান চলছে। আগামী কয়েক দিনে এ বিষয়ে বিস্তারিত প্রকাশ করা হবে।
দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০১৬ সালে পানামা পেপার্স অনুসন্ধানের পর টেন্ডুলকারসহ আরও বেশ কয়েকজন ভারতীয় তাদের অফশোর সম্পদ ঢেলে সাজান।
এতে বলা হয়, ‘অবৈধ আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ থাকা ভারতীয় ব্যবসায়ীরা করস্বর্গ হিসেবে পরিচিত দেশগুলোতে অফশোর নেটওয়ার্ক তৈরি করেন।
‘ওই সব দেশের মধ্যে সামোয়া, বেলিজ, ব্রিটিশ ভার্জিনিয়া, পানামা রয়েছে।’
প্যান্ডোরা পেপার্সে ভারতের জেলে থাকা বন্দি, সাবেক আইনপ্রণেতা, সাবেক ট্যাক্স কমিশনার, উচ্চপর্যায়ের সাবেক সেনা কর্মকর্তা, সাবেক আইন কর্মকর্তাসহ আরও অনেকে রয়েছেন।
প্যান্ডোরা পেপার্স জানায়, ব্রিটিশ ভার্জিনিয়া দ্বীপপুঞ্জে একটি অফশোর কোম্পানির মালিক শচীন টেন্ডুলকার, তার স্ত্রী অঞ্জলি টেন্ডুলকার ও শ্বশুর আনন্দ মেহতা।
পানামা পেপার্সের তথ্য ফাঁসের তিন মাস পর টেন্ডুলকার পরিবারের কোম্পানি সাস ইন্টারন্যাশনাল বন্ধ করে দেয়া হয়। ২০১২ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত টেন্ডুলকার ভারতের সংসদ সদস্য থাকার সময় ওই কোম্পানি কার্যকর ছিল।
শচীন টেন্ডুলকার ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও পরিচালক মৃন্ময় মুখার্জি বলেন, ‘সাবেক এই ক্রিকেটারের বিনিয়োগ বৈধভাবে ভারতের ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে করা হয়। আয়কর কর্তৃপক্ষও বিষয়টি সম্পর্কে অবগত।’
দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতের রিলায়েন্স কমিউনিকেশন্সের চেয়ারম্যান ও বিজনেস টাইকুন অনিল আম্বানি ও তার প্রতিনিধিদের ব্রিটিশ ভার্জিনিয়া দ্বীপপুঞ্জ ও সাইপ্রাসে কমপক্ষে ১৮টি অফশোর কোম্পানি রয়েছে।
২০০৭ সাল থেকে ২০১০ সালের ভেতর প্রতিষ্ঠা করা ১৮টির মধ্যে ৭টি কোম্পানি অন্তত ১.৩ বিলিয়ন ডলার ঋণ করে বিনিয়োগ করে।
এ ছাড়া কংগ্রেসের নেতা, সাবেক মন্ত্রী ও গান্ধী পরিবারের বন্ধু সতীশ শর্মার নামও প্যান্ডোরা পেপার্সে উল্লেখ রয়েছে।