ভারতে অনুপ্রবেশের সময় পাকিস্তানভিত্তিক সন্ত্রাসী সংগঠন লস্কর-ই-তাইয়েবার এক সদস্যকে জীবিত আটক ও আরেকজন গুলিতে নিহত হয়েছে। এ নিয়ে সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে সীমান্তে গত সাত দিনে সাতজনকে হত্যার কথা জানিয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে কাশ্মীর উপত্যকার নিয়ন্ত্রণরেখা এলাকায় সোমবার সন্ধ্যায় ব্যাপক গোলাগুলি হয়।
ভারতীয় সেনাবাহিনী মঙ্গলবার জানায়, জম্মু-কাশ্মীরে বারামুল্লা জেলার সীমান্ত শহর উরিতে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান চালানো হয়। এর জেরে সে সময় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি।
ভারতের সেনা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল বীরেন্দ্র ভাটস সাংবাদিকদের বলেন, ‘এক সন্ত্রাসী আত্মসমর্পণ করার পর তাকে হেফাজতে নেয়া হয়েছে। সে নিজের নাম আলী বাবর পত্র বলে জানিয়েছে। তার বয়স ১৯ বছর।
‘নিজেকে পাকিস্তানের পাঞ্জাবের বাসিন্দা বলে জানানো আলী লস্কর-ই-তাইয়েবার সদস্য বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। পাকিস্তানের মুজাফফরাবাদে গোষ্ঠীটির কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছে সে।’
গত কয়েক বছরে ভারতে পাকিস্তানি অনুপ্রবেশকারীকে জীবিত আটকের ঘটনা এটাই প্রথম।
গত এক সপ্তাহে সাত অনুপ্রবেশকারীকে হত্যার কথা উল্লেখ করে মেজর জেনারেল ভাটস বলেন, ‘পুরো নিয়ন্ত্রণরেখা এলাকাজুড়ে এমন পরিস্থিতি। পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর সাহায্য ছাড়া এত মানুষের পক্ষে সীমান্ত পেরোনো সম্ভব নয়। কারণ সীমান্তের ওপারে আগে পাকিস্তানি সীমান্তরক্ষীদের পার হয়ে আসতে হয় সন্ত্রাসীদের।’
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানের সঙ্গে অস্ত্রবিরতিতে যায় ভারত। এরপর সম্প্রতি নিয়ন্ত্রণরেখা এলাকায় সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান শুরু করে ভারতীয় বাহিনী। এরই অংশ হিসেবে সোমবার ধরা পড়ে কথিত লস্কর-ই-তাইয়েবা সদস্য।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে উরি ও রামপুর সেক্টরে বেশ কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করেছে ভারতীয় বাহিনী। টহলের সময় মোট তিনটি অনুপ্রবেশের চেষ্টা ঠেকিয়েছে। বন্দুকযুদ্ধের পর চার সন্ত্রাসী পাকিস্তানে ফিরে গেলেও ভারতে প্রবেশ করে লুকিয়ে যায় দুজন। তাদের ঘিরে ফেলতেই সেনাদের অঞ্চলটিতে একত্রিত করা হয় বলে জানান মেজর জেনারেল ভাটস।
অভিযানে একে সিরিজের সাতটি রাইফেল, নয়টি পিস্তল ও রিভলবার, ৮০টির বেশি গ্রেনেড এবং ভারতীয় ও পাকিস্তানি মুদ্রা জব্দ করা হয়েছে।
অভিযান চলাকালীন গত তিন দিনে চার ভারতীয় সেনাও আহত হয়েছেন।
সালামাবাদ নালা এলাকা হয়ে অনুপ্রবেশের এসব চেষ্টা হয়েছিল। ২০১৬ সালে উরিতে ভারতীয় বাহিনীর সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালানো সন্ত্রাসীরাও এ পথেই ভারতে অনুপ্রবেশ করেছিল। ওই হামলায় নিহত হয় ১৯ ভারতীয় সেনা। হামলার কিছুদিন পরই নিয়ন্ত্রণরেখা এলাকায় সন্ত্রাসীদের ঘাঁটি ধ্বংসে কয়েক দফা সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালায় ভারত।