আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে নগর প্রশাসনের নারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাড়িতে থাকার আদেশ দিয়েছে নতুন শাসকদল তালেবান।
কাবুলের অন্তর্বর্তী মেয়র হামদুল্লাহ নামোনি দায়িত্ব গ্রহনের পর প্রথম সংবাদ সম্মেলনে জানান, কোনো পদের জন্য পুরুষ কর্মী না পাওয়া গেলে শুধু ওই পদে নারী কর্মীকে বহাল রাখা হবে।
বার্তা সংস্থা এপির প্রতিবেদনে বলা হয়, নারীদের ওপর তালেবানের বিধিনিষেধ জারির ধারাবাহিকতায় রোববার আসে এ ঘোষণা। মেয়র জানান, কাবুলের নগর প্রশাসনের সব বিভাগ মিলে পদ প্রায় তিন হাজার, যার এক-তৃতীয়াংশেই কর্মরত ছিলেন নারীরা।
নামোনি জানান, আপাতত এই নারী কর্মীদের ঘরে থাকার আদেশ দেয়া হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশনা আসার আগ পর্যন্ত এই আদেশ বহাল থাকবে। নকশা ও প্রকৌশলবিষয়ক বিভাগ ও নারীদের পাবলিক টয়লেটগুলো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে পর্যাপ্ত পুরুষ কর্মী পাওয়া না গেলে ব্যতিক্রম ঘটতে পারে।
এ আদেশের ফলে কত নারী চাকরিচ্যুত হবেন, তা জানা নেই বলে জানিয়েছেন কাবুলের মেয়র। তিনি বলেন, ‘কিছু কাজ আছে, যেগুলো পুরুষরা পারে না। সেসব কাজে নারী কর্মীদের দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেয়া হবে, কারণ এর অন্য বিকল্প নেই।’
এর আগে শুক্রবার আফগানিস্তানের নারী মন্ত্রণালয় স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেয় শাসকগোষ্ঠী। এর প্রতিবাদে আজ বন্ধ হয়ে যাওয়া নারী মন্ত্রণালয়ের বাইরে কয়েকজন নারী বিক্ষোভ করেন। জনজীবনে নারীদের অংশগ্রহণ করতে দেয়ার দাবি জানান তারা।
বিক্ষোভে অংশ নেয়া ৩০ বছর বয়সী বশিরা তাওয়ানা বলেন, ‘কেন তালেবান আমাদের সব অধিকার হরন করছে? আমাদের আর সন্তানদের অধিকার আদায়ের জন্য এখানে এসেছি।’
বিক্ষোভকারীদের একটি ব্যানারে লেখা ছিল, ‘যে সমাজে নারীরা সক্রিয় নয়, সেটা মৃত সমাজ।’
কিন্তু ওই বিক্ষোভ স্থায়ী হয় মাত্র ১০ মিনিট। এক ব্যক্তির সঙ্গে রাস্তাতেই আলোচনার পর বিক্ষোভে অংশ নেয়া নারীরা গাড়িতে চড়ে চলে যান। সে সময় কাছেই দুটি গাড়িতে তালেবান সদস্যরা অবস্থান করছিল।
অন্যদিকে, তালেবানের নির্দেশনা অনুযায়ী শনিবার থেকে মেয়ে শিক্ষার্থী ও শিক্ষিকা ছাড়াই আফগানিস্তানের স্কুলগুলোতে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
গত মাসে কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর নারী অধিকার নিয়ে নানা আশ্বাস দিলেও শেষ পর্যন্ত কোনো কথাই রাখছে না গোষ্ঠীটি। নব্বইয়ের দশকের শাসনামলের মতোই নারীদের শিক্ষাগ্রহণ, জীবিকা উপার্জনসহ সব মৌলিক অধিকার একে একে বাতিল করছে তারা।