ভারতের কমপক্ষে তিনটি রাজ্যে বড় ধরনের নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগে কমপক্ষে ছয়জনকে আটক করা হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্য।
জানা যায়, রামলীলা, নবরাত্রীর মতো হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিভিন্ন উৎসব সামনে রেখে হামলার পরিকল্পনা চলছে বলে খবর পেয়েছে পুলিশ। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অনুসন্ধানে নেমে মঙ্গলবার কয়েকজনকে আটক ও জিনিসপত্র জব্দ করে দিল্লি পুলিশের বিশেষ সেলের সদস্যরা।
আটককৃতদের কয়েকজন ছদ্ম নাম-পরিচয় ব্যবহার করছিলেন।
এদের মধ্যে জান মহম্মদ শেখের বাড়ি মহারাষ্ট্রে, ওসামা ওরফে শামির বাড়ি দিল্লির জামিয়া নগরে, মূলচন্দ ওরফে সাজু উত্তর প্রদেশের রায়বেরেলির বাসিন্দা, জিশান কামারের বাড়ি এলাহাবাদে, মোহাম্মদ আবু বকরের বাড়ি বাহরইচে এবং মোহাম্মদ আমির জাভেদের বাড়ি লক্ষ্নৌতে।
প্রাথমিক তদন্তে বেরিয়ে এসেছে, দিল্লি, মহারাষ্ট্র ও উত্তর প্রদেশে হামলার পরিকল্পনা ছিল সন্ত্রাসীদের।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আটককৃতদের মধ্যে ওসামা ও জিশান প্রতিবেশী পাকিস্তানের মদদপুষ্ট। পাকিস্তানের আন্তবাহিনী গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন দুজনই।
অভিযোগ, আইএসআইয়ের নির্দেশেই এতদিন চলছিলেন তারা। তাদের ওপর নির্দেশ ছিল উত্তর প্রদেশ ও দিল্লির জনবহুল এলাকায় উৎসবের ভিড়ভাট্টার মধ্যে বিস্ফোরণ ঘটানোর।
দিল্লি পুলিশের বিশেষ সেলের ভারপ্রাপ্ত অতিরিক্ত কমিশনার নীরজ ঠাকুর সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থার সূত্রে আমরা নাশকতার পরিকল্পনার খবর জানতে পারি। পরে মঙ্গলবার সকালে অভিযান চালিয়ে রাজস্থানের কোটা থেকে একজনকে আটক করা হয়। তিনজনকে আটক করেছে উত্তর প্রদেশের সন্ত্রাস দমন স্কোয়াড এটিএস। বাকি দুজন দিল্লিতে আটক হয়েছেন।’
আটককৃতদের জঙ্গি আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘এদের মধ্যে ওসামা ও জিশান কিছুদিন আগে ওমানের মাস্কটে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে নৌকায় চড়ে পাকিস্তানে গিয়ে ১৫ দিন অস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণ নের তারা। তাদের শক্তিশালী জঙ্গি হয়ে ওঠার শিক্ষাও দেয় আইএসআই। প্রশিক্ষণ শেষে তারা দুবাই হয়ে ভারতে ফিরে আসেন।’
নীরজ ঠাকুর বলেন, ‘এ চক্রান্তে পাকিস্তানি সন্ত্রাসী দাউদ ইব্রাহিমের ভাই আনিস ইব্রাহিমের হাত থাকতে পারে। কারণ সমীর নামে তার কাছের একজনকে পাকিস্তানের এক অজ্ঞাত ব্যক্তি ভাড়া করেছিল। তার ওপর বিস্ফোরকসহ গ্রেনেড ও আধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র সরবরাহের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল।’
ভারপ্রাপ্ত কমিশনার আরও বলেন, ‘জেরার মুখে আটককৃতরা স্বীকার করেছেন যে তাদের মধ্যে ইব্রাহিম নামে একজনের কাজ ছিল তহবিল জোগান দেয়া। আর লালা নামের একজনের দায়িত্ব ছিল আন্ডারওয়ার্ল্ডের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করা। এ ছাড়া তাদের সঙ্গে আরও ১৪ থেকে ১৫ জন ছিল, যারা বাংলা ভাষায় কথা বলত।’
নীরজ ঠাকুর জানান, জঙ্গিরা ভারতে লুকিয়ে থাকলেও তাদের পরিচালনা করা হতো সীমান্তের ওপার থেকে।