আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর নারী অধিকারসহ অন্যান্য নাগরিক অধিকারের প্রতি সম্মান জানানোর অঙ্গীকার থেকে তালেবান সরে এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা।
সুইজারল্যান্ডের জেনেভা শহরে সোমবার জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাশেলেট এ মন্তব্য করেন বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
ব্যাশেলেট বলেন, ‘গত মাসে কট্টর ইসলামপন্থি সংগঠন আফগানিস্তানের ক্ষমতা কুক্ষিগত করার পর বিপজ্জনক অধ্যায়ে প্রবেশ করেছেন দেশটির সাধারণ নাগরিকরা।
‘তালেবান নারীদের ঘরে থাকতে বলছে, কিশোরীদের স্কুলে যেতে নিষেধ করছে এবং শত্রুদের ঘরে হানা দিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছে।
‘এতে নারীর পাশাপাশি জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অনেকে গভীর উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন।’
জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদকে ব্যাশেলেট বলেন, ‘গত তিন সপ্তাহে বহুবার নারী অধিকারের পক্ষে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেয় তালেবান।
‘পরিবর্তে জনপরিসরে আফগান নারীদের উপস্থিতি ধীরে ধীরে বিলীন করে দেয়া হচ্ছে।’
তালেবানের অন্তর্বর্তীকালীন নতুন সরকার নিয়েও হতাশা প্রকাশ করেন জাতিসংঘের এ কর্মকর্তা।
প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে সরকারে কোনো নারী না রাখা এবং জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি না রেখে সংখ্যাগরিষ্ঠ পশতুন সম্প্রদায় অধ্যুষিত মন্ত্রিসভা গঠন করায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন ব্যাশেলেট।
তিনি বলেন, ‘আফগানিস্তানের কয়েকটি জায়গায় ১২ বছরের বেশি বয়সী কিশোরীদের স্কুলে যেতে দেয়া হচ্ছে না।
‘একই সঙ্গে নারীদেরও ঘরের বাইরে বের হওয়ার অনুমতি মিলছে না। এ পরিস্থিতি নারীর প্রতি তালেবানের আগের শাসনামলকে মনে করিয়ে দিচ্ছে।’
আফগানিস্তানের সাবেক সরকারি ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সাধারণ ক্ষমা করার অঙ্গীকারও তালেবান রাখছে না বলে মন্তব্য করেন ব্যাশেলেট।
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন কোম্পানি ও নিরাপত্তা বাহিনীতে আগের সরকারের সময়ে কাজ করা ব্যক্তিদের তালেবান হন্যে হয়ে খুঁজছে বলে বেশ কয়েকটি অভিযোগ পেয়েছে জাতিসংঘ।
‘আফগানিস্তানের সেনাবাহিনীর সাবেক সদস্যদের প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে হত্যা করার অভিযোগও জাতিসংঘের কাছে করা হয়েছে।’
আফগানিস্তানের মানবাধিকার পরিস্থিতি নজরদারিতে রাখার আহ্বান জানিয়ে ব্যাশেলেট বলেন, ‘জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদকে দক্ষিণ এশিয়ার দেশটির বিষয়ে সাহসী ও জোরালো পদক্ষেপ নিতে ফের অনুরোধ জানাচ্ছি।’