আফগানিস্তানে তালেবান সরকারের ক্ষমতা দখলে চিন্তিত ভারত সরকার। এ জন্য নিজেদের নিরাপত্তা রক্ষায় কোনো ধরনের গাফিলতি করতে নারাজ দেশটি।
তালেবানের উত্থান ভারতের নিরাপত্তা পরিস্থিতির ওপর ‘গুরুতর প্রভাব’ পড়তে পারে। তাই তালেবান মোকাবিলায় দেশটির স্থল নিরাপত্তায় নিয়োজিত বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যদের নতুন কৌশল প্রশিক্ষণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি তাদের রণনীতি পাল্টে আরও মজবুত ও সময় উপযোগী করার করা বলেছে ভারত।
মূলত ১৫ আগস্ট তালেবানরা কাবুলের দখল নেয়ার পর থেকেই ভারতের নিরাপত্তার বিষয়টি বারবার সামনে আসছে।
নিজেদের নিরাপত্তায় ভারত সরকারের যে নির্দেশিকা দিয়েছে তাতে বলা হয়, তালেবানদের উত্থানে ভারতে তাদের অনুপ্রবেশ বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ভারতের সীমান্ত এবং পশ্চিমাঞ্চলে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে গুরুতর প্রভাব পড়তে পারে।
তাই সীমান্তরক্ষী বিএসএফ, সিআরপিএফ বা এসএসবির মতো বাহিনীকে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এরই মধ্যে সব রাজ্যের পুলিশকে দেয়া হয়েছে বিশেষ নির্দেশনা।
নির্দেশনায় ভারতে সীমান্তরক্ষী বাহিনী, সশস্ত্র পুলিশ, স্থল বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাকে তালেবানের গতিবিধির ওপর কড়া নজর রাখতে বলা হয়েছে।
পাশাপাশি নতুন প্রশিক্ষণ মডিউল প্রস্তুত ও তা কার্যকর করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তাদের রণনীতি ও সিলেবাস উভয়ই আপডেট করতে বলা হয়েছে।
ভারত মনে করছে, আফগানিস্তানে ২০ বছর আগে চলা তালেবানি শাসন থেকে বর্তমান পরিস্থিতি অনেক ভিন্ন। এখন তাদের হাতে রয়েছে অনেক অত্যাধুনিক অস্ত্র। শুধু তাই নয়, যে অঞ্চলে আগে তারা কখনও প্রবেশ করতে পারেনি, সেই পাঞ্জশিরেও এখন তালেবানদের উপস্থিতি রয়েছে।
তাই তালেবানের গতিবিধি রীতিমতো উদ্বেগ বাড়াচ্ছে প্রতিবেশী ভারতের। তালেবানের সহযোগী সংগঠনগুলো ভারতের দিকে পা বাড়াতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন দেশটির গোয়েন্দারা। তাই তাদের রুখতে বিশেষ প্রস্তুতির নির্দেশ দেয়া হয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীকে।
ভারতে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা উচ্চপদস্থ একজন কর্মকর্তা জানান, সীমান্ত রক্ষায় নিয়োজিত বাহিনী অর্থাৎ বিএসএফ, এসএসবি, রাজ্য পুলিশের বিশেষ ইউনিট, সিআরপিএফ, এমনকি জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের প্রশিক্ষণ পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, পুলিশের চাকরির শুরুতে যে প্রশিক্ষণ দেয়া হয় তাতেও পরিবর্তনের পরিকল্পনা রয়েছে।
ভারতের নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তারা মনে করেন, সীমান্তরক্ষীদের তালেবানের ইতিহাস জানা অত্যন্ত জরুরি। সঙ্গে জানতে হবে তাদের রণকৌশলও।