দুই দশক পর আফগানিস্তানের দখল পাওয়ার শুরুতে প্রগতিশীল চিন্তাভাবনার কথা বললেও সময়ের সঙ্গে স্বরূপ দেখাচ্ছে তালেবান। তাদের বিরুদ্ধে এবার রাষ্ট্রীয় রেকর্ডিং স্টুডিওতে তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ উঠেছে।
ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড দ্য সানের সাংবাদিক জেরোম স্টার্কি রোববার স্টুডিটি ঘুরে টুইটারে কিছু ছবি শেয়ার করেন। এসব ছবিতে দেখা যায়, স্টুডিওর গ্র্যান্ড পিয়ানো দুটি ভেঙে চুরমার করে ফেলা হয়েছে। ভারী কোনো বস্তু দিয়ে আঘাত করে নষ্ট করে ফেলা হয়েছে ড্রাম, তবলাসহ অন্যান্য বাদ্যযন্ত্র। পুরো স্টুডিওতেই রয়েছে তাণ্ডবের ছাপ।
ইন্ডিয়া টুডের খবরে বলা হয়েছে, সাংবাদিক জেরোম স্টার্কি এই স্টুডিওর প্রবেশমুখে দেখতে পান অস্ত্র হাতে দাঁড়িয়ে আছে দুজন তালেবান যোদ্ধা। এই তাণ্ডবের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তারা জানায়, এসে এ অবস্থায় দেখেছে স্টুডিটি।
তালেবানরক্ষীদের এই উত্তরে সন্তুষ্ট হতে পারেননি সাংবাদিক জেরোম স্টার্কি। টুইটারে তিনি লেখেন, ‘আগামীতে এ ঘটনা আরও ঘটবে। সত্যিই ভয় করছে।’
আফগানিস্তানের শিল্পী মহলের আশঙ্কা, ফের দেশে নিষিদ্ধ হতে চলছে সংগীত। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তালেবান ক্ষমতায় থাকাকালে সংগীত নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।
গত ১৫ আগস্ট রাজধানী কাবুল দখলের পর তালেবান যে উদার নীতির কথা বলেছিল, ধীরে ধীরে তারা সে অবস্থান থেকে সরে আসছে।
শুরুতে নারীদের সরকারে অন্তর্ভুক্ত করার ঘোষণা দিলেও নিজেদের অবস্থান কিছুটা পোক্ত করার পরপরই সে জায়গা থেকেও সরে আসে তালেবান। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আরোপ করে কড়াকড়ি। শ্রেণিকক্ষে কঠোর পর্দাব্যবস্থার মধ্যে ক্লাস শুরু হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পর্দার এক পাশে রাখা হয় ছাত্র; অপর পাশে রাখা হয় ছাত্রীদের। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদের নেকাব পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
তালেবান ক্ষমতা নেয়ার পর সংগীতের ওপর যত হামলা
আগস্টের শেষ দিকে কান্দাহারে টেলিভিশন ও রেডিও চ্যানেলে গানবাজনা ও নারী কণ্ঠ নিষিদ্ধ করা হয়।
গত ৪ সেপ্টেম্বর আফগানিস্তানের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ মিউজিক বন্ধ করে দেয় তালেবান।
সবচেয়ে ভয়াবহ ঘটনা ঘটে গত সপ্তাহে। আন্দারাবি উপত্যকায় তালেবানের গুলিতে প্রাণ হারান লোকসংগীতশিল্পী ফাওয়াদ আন্দরাবি।