অতিরিক্ত শিকারের কারণে বিশ্বে প্রতি পাঁচটি হাঙরের দুটিই বিলুপ্তির মুখে। ঝুঁকিতে আছে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ সরীসৃপ ইন্দোনেশিয়ার কোমোডো ড্রাগনও।
অন্যদিকে এক দশকের বেশি সময় পর অস্তিত্বসংকট থেকে স্বাভাবিকের তালিকায় ফিরেছে রপ্তানি বাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ টুনা মাছের চারটি প্রজাতি।
আল-জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়, পরিবেশ ও বন্য প্রাণী সংরক্ষণবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠন আইইউসিএন অস্তিত্বসংকটে থাকা বন্য প্রাণীর তালিকা হালনাগাদ করেছে।
সে তালিকাতেই উঠে এসেছে প্রকৃতিতে হাঙর, কোমোডো ড্রাগনসহ বিভিন্ন প্রাণীর বর্তমান অবস্থা।
বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তন ও বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির প্রভাবে সমুদ্রের উচ্চতা বাড়তে থাকায় বাসস্থান হারাচ্ছে কোমোডো ড্রাগন।
আবার প্রতি ১০টি হাঙর ও রে প্রজাতির মাছের মধ্যে বিলুপ্তির মুখে কমপক্ষে চারটি।
১ লাখ ৩৮ হাজার প্রজাতির বন্য প্রাণীর অস্তিত্ব পর্যবেক্ষণ করেছে আইইউসিএন। এর ২৮ শতাংশই চিরকালের জন্য হারিয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে বলে সতর্ক করেছে সংস্থাটি।
বিলুপ্তপ্রায় প্রাণীগুলোর অস্তিত্বসংকটের প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয় জলবায়ু পরিবর্তন, বন্য প্রাণীর আবাস হারানো, অত্যধিক শিকার ও অবৈধ বাণিজ্যকে।
আইইউসিএন জানায়, বন্যপ্রাণীর ওপর চাপ ক্রমশ বাড়ছে।
তবে জোরদার সংরক্ষণ প্রচেষ্টার কারণে কিছু প্রাণী আবার ঝুঁকিমুক্তও হয়েছে। যেমন টুনা।
আইইউসিএন জানিয়েছে, ১০ বছর ধরে সংরক্ষণের প্রচেষ্টার পরে টুনার সংখ্যা আবার বাড়ছে। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য আটলান্টিক ব্লুফিন টুনা।
অস্তিত্বসংকটের তিনটি ধাপ উতরে আটলান্টিক ব্লুফিন টুনা অস্তিত্ব সুরক্ষিত বিবেচনায় উঠে এসেছে ‘ন্যূনতম অস্তিত্ব ঝুঁকিতে থাকা প্রাণী’র তালিকায়। জাপানের জনপ্রিয় খাবার সুশির প্রধান উপকরণ টুনার এই প্রজাতিটি, যা শেষবার পুনর্মূল্যায়ন হয়েছিল ২০১১ সালে।
টুনা পুনরুদ্ধারকে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি উল্লেখ করে আইইউসিএন রেড লিস্ট ইউনিটের প্রধান ক্রেইগ হিলটন-টেইলর বলেন, ‘গত দুই দশকের বেশি সময় ধরে আইন করে মাছ ধরা সীমিত রাখায় এ সাফল্য অর্জন সম্ভব হয়েছে।’
কিন্তু সমুদ্রের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে আগামী ৪৫ বছরের মধ্যে সামুদ্রিক প্রাণীর আবাসস্থল কমপক্ষে ৩০ শতাংশ কমে যাবে বলে সতর্ক করেছে আইইউসিএন।
খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) তথ্য অনুযায়ী, প্রতিবছর ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃতভাবে প্রায় আট লাখ হাঙর ধরা পড়ে। তবে অনুসন্ধান ও গবেষণায় উঠে এসেছে যে প্রকৃত সংখ্যা দুই থেকে চার গুণ বেশি।