বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ভারতে আবার কৃষক বিদ্রোহ

  •    
  • ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৯:৪৩

‘দেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ৯০ বছর ধরে চলেছিল। আমরা জানি না কৃষকদের এই আন্দোলন কত বছর ধরে চলবে।’

২৫ সেপ্টেম্বরের পরিবর্তে ২৭ সেপ্টেম্বর ভারত বন্‌ধের ডাক দিয়েছে নতুন কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে আন্দোলনরত কৃষক সংগঠনগুলোর সম্মিলিত মোর্চা।

একই সঙ্গে আগামী বছরের শুরুতে বিভিন্ন রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও প্রচার চালিয়ে যাওয়ার সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করেছেন আন্দোলনরত কৃষকরা।

রোববার উত্তর প্রদেশের মুজাফফরনগরে ঐতিহাসিক কৃষক মহাপঞ্চায়েতের মঞ্চ থেকে সংযুক্ত কিষান মোর্চার নেতারা বলেছেন, ‘কেন্দ্র বলেছে, মুষ্টিমেয় কয়েকজন কৃষকই প্রতিবাদ করছেন।

‘আজ তারা দেখে যাক কতজন প্রতিবাদ করছেন। আসুন, আজ আমরা এমন আওয়াজ তুলি যাতে ক্ষমতায় যারা বসে, তাদের কানে তা সমুদ্র গর্জন হয়ে পৌঁছায়।’ গত ৯ মাস ধরে দিল্লি, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশের সিংঘু, টিকরি ও গাজীপুর সীমান্তে কৃষকরা অবস্থান বিক্ষোভ করে ৪০টি কৃষক সংগঠনের মঞ্চ সংযুক্ত কিষান মোর্চার নেতৃত্বে।

এই মোর্চার আহ্বানেই রোববার কৃষক মহাপঞ্চায়েতে অংশ নেন লক্ষাধিক মানুষ।

শুধু উত্তর প্রদেশ, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরাখন্ড, রাজস্থানের কৃষকরাই নন, মহাপঞ্চায়েতে শামিল হয়েছিলেন দেশের অন্তত ১৫টি রাজ্যের ৩০০-এর বেশি ছাত্র-যুব-মহিলা-শিক্ষক-সামাজিক-অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী-শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা।

মহাপঞ্চায়েত ঘিরে যাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয়, তা নিশ্চিতে আট হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়।

মহাপঞ্চায়েতে ভারতীয় কিষান ইউনিয়ন (বিকেইউ) নেতা রাকেশ টিকাইত কেন্দ্রের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘দিল্লির সীমান্তে কৃষকদের প্রতিবাদ অব্যাহত থাকবে এমনকি সেখানে আমাদের কবর তৈরি হলেও।’

রাকেশ টিকাইত বলেন, ‘প্রয়োজনে আমরা আমাদের জীবন দেব কিন্তু বিজয়ী না হওয়া পর্যন্ত আমরা ধর্না ছাড়ব না।’

মুজাফফরনগরের জিআইসি গ্রাউন্ডে মহাপঞ্চায়েতে অংশ নিতে মিরাট থেকে পৌঁছান রাকেশ টিকাইত।

টিকাইত মঞ্চে উঠে ‘আল্লাহু আকবর’ ও ‘হর হর মহাদেব’ স্লোগান দিয়ে বলেন, ‘আল্লাহ আকবর ও হর হর মহাদেবের স্লোগান আগেও দেয়া হতো এবং আগামী দিনেও তা অব্যাহত থাকবে।

‘ক্ষমতাসীনরা বিভাজনের কাজ করছে। আমাদের তাদের থামাতে হবে। আমরা উত্তর প্রদেশের জমি দাঙ্গাকারীদের হাতে তুলে দেব না।’

বিকেইউ নেতা আরও বলেন, ‘আন্দোলনের পাশাপাশি সরকার যখন কথা বলতে চাইবে, আমরা তখন কথাও বলব।

‘দেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ৯০ বছর ধরে চলেছিল। আমরা জানি না কৃষকদের এই আন্দোলন কত বছর ধরে চলবে।’

মোদি সরকারের নগদীকরণ নীতি বিষয়ে রাকেশ টিকাইত বলেন, ‘ওই নীতির বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই ‘মিশন ইউপি’ নয়, ওই লড়াইটা ‘মিশন ইন্ডিয়া’।

‘আমাদের মিশন ইন্ডিয়া দেশের সংবিধান, সম্পদ, স্বনির্ভরতা রক্ষার লড়াই। মোদি ও যোগী সরকার বিদ্যুৎ, বিমানবন্দর সবকিছু বিক্রি করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

‘সেই প্রস্তুতির বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই। আমাদের আরও বড় সভা-মিছিল করতে হবে।

‘এটা শুধু উত্তরপ্রদেশ বা উত্তরাখন্ডে সীমাবদ্ধ রাখলে হবে না। দেশজুড়ে ৬০০ কৃষকের মৃত্যু হয়েছে বিক্ষোভের সময়। সরকার কারও জন্য দুঃখপ্রকাশ করেনি।

‘আমাদের লক্ষ্য দেশকে বাঁচাতে হবে। আর সেই লক্ষ্যে আমাদের সফল হতেই হবে।’

এদিকে রোববারের কৃষক মহাপঞ্চায়েত নিয়ে ভারত সরকারের মন্তব্যের বিপক্ষে মন্তব্য করেছেন বিজেপির সংসদ সদস্য বরুণ গান্ধী।

উত্তর প্রদেশের পিলিভিট লোকসভা কেন্দ্রের এ সংসদ সদস্য টুইটবার্তায় বলেন, 'মুজাফফরনগরে লাখ লাখ কৃষক আজ প্রতিবাদে জড়ো হয়েছেন।

‘কৃষকরা আমাদের নিজেদেরই রক্ত-মাংসে গড়া। সম্মানজনক পদ্ধতিতে আমাদের তাদের সঙ্গে ফের আলোচনায় বসতে হবে। তাদের ব্যথা, তাদের দৃষ্টিভঙ্গি বুঝতে হবে এবং তাদের সঙ্গে কমন গ্রাউন্ডে পৌঁছানোর জন্য কাজ করতে হবে।’

কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে গত বছরের নভেম্বর থেকে আন্দোলন করছেন ভারতের পাঞ্জাব, হরিয়ানাসহ অন্যান্য রাজ্যের কৃষকরা।

কৃষকদের ভাষ্য, সেপ্টেম্বরে পাস হওয়া নতুন কৃষি আইনে তাদের উৎপাদিত পণ্যের মূল্য কমে যাবে। সর্বনিম্ন মূল্যে সরকার শস্য কেনা বন্ধ করে দিতে পারে বলে আশঙ্কা তাদের। করপোরেট প্রতিষ্ঠানের কাছে কম মূল্যে পণ্য বিক্রি করতে বাধ্য হবেন কৃষকরা।

এ বিভাগের আরো খবর