বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

যে ৫ কারণে পিছিয়েছে তালেবানের সরকার গঠন

  •    
  • ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০১:৫৪

পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ফয়েজ হামিদের আকস্মিক কাবুল সফরে পিছিয়ে পড়েছে তালেবানের নতুন সরকার গঠনের ঘোষণা। ইসলামিক প্রজাতন্ত্র ইরানের আদলে সরকার গঠন করতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে হাক্কানি নেটওয়ার্কের কট্টর ও বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতারা। অন্যদিকে তালেবান নেতারা চাইছে সব মত ও গোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের নিয়ে অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠন করতে, যা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে গ্রহণযোগ্যতা পাবে।

তালেবানের সরকার গঠনের ঘোষণা দ্বিতীয়বারের মতো পিছিয়েছে। আগামী সপ্তাহে আসতে পারে নতুন সরকারের ঘোষণা।

পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্সের (আইএসআই) প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ফয়েজ হামিদের আকস্মিক কাবুল সফরে পিছিয়ে পড়েছে তালেবানের নতুন সরকার গঠনের ঘোষণা। এমন বিশ্লেষণ উঠে এসেছে সংবাদমাধ্যম ফার্স্টপোস্টের প্রতিবেদনে।

আইএসআই প্রধানের সঙ্গে শনিবার তালেবান নেতাদের কী আলোচনা হয়েছে বা ফয়েজ হামিদ তাদের কী পরামর্শ দিয়েছেন তা এখনও জানা যায়নি।

ফার্স্টপোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তালেবানের ওপর এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি প্রভাবশালী বিদেশি শক্তি প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান। ইসলামাবাদে তালেবান সদর দপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা দাবি করেছেন, দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের সঙ্গে তাদের আঁতাত রয়েছে।

যদিও কট্টর ইসলামপন্থি গোষ্ঠী তালেবান যোদ্ধাদের সামরিক সহায়তা দেয়ার বিষয়টি বরাবরের মতো অস্বীকার করে আসছে ইসলামাবাদ। কাবুল ও ওয়াশিংটনের এমন অভিযোগ সব সময় নাকচ করে দিয়েছে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থাটি।

সংবাদমাধ্যম সিএনএন-নিউজ-এইটিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তালেবান শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে গোষ্ঠীটির আত্মঘাতী বোমা হামলাকারীদের সমন্বয়কারী হাক্কানি নেটওয়ার্কের নেতাদের দর-কষাকষির কারণে পিছিয়েছে নতুন সরকার গঠনের প্রক্রিয়া।

ইসলামিক প্রজাতন্ত্র ইরানের আদলে সরকার গঠন করতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে হাক্কানি নেটওয়ার্কের কট্টর ও বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। যেখানে দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা হবেন দেশের প্রেসিডেন্ট।

অন্যদিকে তালেবান নেতারা চাইছে সব মত ও গোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের নিয়ে অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠন করতে, যা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে গ্রহণযোগ্যতা পাবে।

সরকার গঠনে বিলম্বের আরেক কারণ হিসেবে পর্যবেক্ষকরা বলছেন, তালেবানের প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা ওমরের ছেলে মোল্লা ইয়াকুব নতুন সরকারে সামরিক নেতৃত্বের প্রাধান্য চাইছেন।

অন্যদিকে তালেবানের সহপ্রতিষ্ঠাতা মোল্লা বারাদর, যিনি নতুন সরকারে হতে যাচ্ছেন প্রধান, তার দাবি অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকারে থাকবে রাজনৈতিক নেতাদের আধিপত্য।

শনিবার তালেবানের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ জানিয়েছেন, বিভিন্ন সংকটে এক সপ্তাহের জন্যে পিছিয়ে গেছে নতুন সরকার গঠনের প্রক্রিয়া। বিশ্বের কাছে গ্রহণযোগ্য অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠনের চেষ্টায় রয়েছেন তারা।

পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ফয়েজ হামিদ রাজধানী কাবুলে পৌঁছান শনিবার। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এবং আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ১৫ আগস্ট তালেবানের হাতে কাবুল পতনের পর এই প্রথম পাকিস্তানের শীর্ষ পর্যায়ের কোনো কর্মকর্তা আফগানিস্তান সফর করছেন।

এদিকে আফগানিস্তানের মানুষ তালেবানের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ সংগ্রাম ও অধিকারের পক্ষে লড়াই চালিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন দেশটির পাঞ্জশির প্রদেশের নেতা আহমেদ মাসুদ। ফেসবুকে শনিবার তিনি এসব মন্তব্য করেন বলে টোলোনিউজের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

মাসুদ বলেন, ‘স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচারের জন্য আফগানরা লড়াই করছে। তারা কখনও সংগ্রামের পথ থেকে পিছু হটবে না।’

তালেবানের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ-সংগ্রাম এখন আর পাঞ্জশিরে সীমাবদ্ধ নেই বলে মন্তব্য করেন মাসুদ। এ ছাড়া নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আফগান নারীরাও পথে নেমেছেন বলে ফেসবুকে উল্লেখ করেন তিনি।

সরকারের ঘোষণা দিতে পারল না তালেবান

শুক্রবার জুমার নামাজের পর নতুন সরকার গঠনের কথা থাকলেও দ্বিতীয় দফায় সে ঘোষণা দিতে ব্যর্থ হয়েছে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেয়া তালেবান।

বিষয়টি নিয়ে তালেবানের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি আসেনি। ফলে কেন বিষয়টি নিয়ে দেরি হচ্ছে, তার ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি।

নিজেদের মধ্যে বিভেদের কারণে সরকার গঠনে দেরি হচ্ছে কিনা তা নিয়েও সংশয় দেখা গেছে। পাশাপাশি, বিপর্যস্ত অর্থনীতি, পাঞ্জশির উপত্যকায় বিদ্রোহীদের সঙ্গে তালেবানের তীব্র লড়াই ও ব্যাপক মাত্রায় গণ-অনাস্থায় নতুন সরকারের ঘোষণা বিলম্বিত হচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গত ১৫ আগস্ট থেকেই কাবুলের নিয়ন্ত্রণ তালেবানের হাতে। প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি প্রতিরোধ না করে চলে যান দেশ ছেড়ে।

সেদিন থেকেই আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রক হয়ে উঠে তালেবান। এর মধ্যে তারা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর নিয়োগ দিয়েছে। দেশ কীভাবে চলবে, কার কাছ থেকে অর্থ সহায়তা আসবে, এমন ঘোষণাও দেয়া হচ্ছে।

তবে সরকারের প্রধান কে, কোন ধরনের সরকার দেশ চালাবে, সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো ধারণা পাওয়া যাচ্ছে না।

দেশটির সংবাদমাধ্যম টোলোনিউজ তালেবানের গোপন সূত্রের বরাত দিয়ে জানায়, তালেবানের সহপ্রতিষ্ঠাতা মোল্লা বারাদর সরকারের প্রধান হতে পারেন। তবে সেই সরকার কবে ঘোষণা হবে, সে বিষয়ে তারাও স্পষ্ট করে কিছু জানাতে পারেনি।

আফগানিস্তান পুনর্গঠনে হাত বাড়ানোর ঘোষণা দেয়া চীনের সংবাদমাধ্যম শিনহুয়াও এ বিষয়ে কিছু জানায়নি।

এ বিভাগের আরো খবর