আফগানিস্তানের মানুষ তালেবানের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ সংগ্রাম ও অধিকারের পক্ষে লড়াই চালিয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির পাঞ্জশির প্রদেশের নেতা আহমেদ মাসুদ।
ফেসবুকে শনিবার তিনি এসব মন্তব্য করেন বলে টোলোনিউজের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
মাসুদ বলেন, ‘স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচারের জন্য আফগানরা লড়াই করছে। তারা কখনো সংগ্রামের পথ থেকে পিছু হটবে না।’
তালেবানের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ সংগ্রাম এখন আর পাঞ্জশিরে সীমাবদ্ধ নেই বলে মন্তব্য করেন মাসুদ।
এ ছাড়া নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আফগান নারীরাও পথে নেমেছেন বলে ফেসবুকে উল্লেখ করেন তিনি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মাসুদ বলেন, ‘পাঞ্জশিরের প্রতিরোধ বা হেরাত প্রদেশে অধিকারের জন্য সোচ্চার হওয়া আমাদের বোনদের প্রতিরোধ এটাই প্রমাণ করে, মানুষ তার ন্যায়সংগত দাবি থেকে সরে আসেনি।
‘আফগান জনগণ তাদের ন্যায্য প্রতিরোধ সংগ্রাম চালিয়ে যাবে। হুমকি দিয়ে তাদের ভীত করা যাবে না।’
কয়েক দিন ধরে পাঞ্জশিরে স্থানীয় বিদ্রোহীদের সঙ্গে তালেবানের তীব্র লড়াই চলছে।
এমন পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার প্রতিরোধ সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করলেন মাসুদ।
বৃহস্পতিবার হেরাত শহরে আফগানিস্তানের নতুন সরকারে নারীদের অন্তর্ভুক্ত করার দাবি নিয়ে বিক্ষোভ হয়। এতে অংশ নেন বেশ কয়েকজন আফগান নারী।
পরের দিন শুক্রবার পার্লামেন্টে নারী আসন, নীতিনির্ধারণী ভূমিকায় নারীর অংশগ্রহণসহ নতুন সরকারে নারীর অর্থপূর্ণ অন্তর্ভুক্তির দাবি নিয়ে রাজধানী কাবুলে বিক্ষোভ করেন উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নারী।
এদিকে শুক্রবার আফগানিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানির ভাইস প্রেসিডেন্ট ও পাঞ্জশিরে প্রতিরোধ সংগ্রামের নেতা আমরুল্লাহ সালেহও তালেবানের বিরুদ্ধে লড়াই জারি রাখার অঙ্গীকার করেন।
১৫ আগস্ট তালেবানের হাতে কাবুল পতনের পর কয়েক হাজার স্থানীয় মিলিশিয়া, আফগান সেনাবাহিনী ও বিশেষ বাহিনীর সাবেক সদস্যদের নিয়ে পাঞ্জশিরে জাতীয় প্রতিরোধ বাহিনী (এনআরএফএ) গড়ে তোলেন স্থানীয় নেতা মাসুদ।
পাঞ্জশিরে তালেবানের বিরুদ্ধে স্থানীয় বিদ্রোহীদের অবস্থান। ছবি: এএফপি
আশির দশকে সোভিয়েত ও নব্বই দশকে তালেবানবিরোধী লড়াইয়ে আফগানিস্তানের আলোচিত যোদ্ধা ছিলেন মুজাহিদীন কমান্ডার প্রয়াত আহমেদ শাহ মাসুদ। তারই ছেলে আহমেদ মাসুদ।
কাবুল পতনের আগে আফগানিস্তানের ৩৪টি প্রদেশের মধ্যে ৩৩টিই তালেবান দখল করতে পারলেও পাঞ্জশির তারা দখল করতে পারেনি।
শুধু এবার নয়, আফগানিস্তানে তালেবান প্রতিষ্ঠার পর আজ পর্যন্ত ওই প্রদেশ কখনো তালেবানের দখলে যায়নি।
ভৌগোলিক অবস্থানগত সুবিধা ও স্থানীয়দের চরম তালেবানবিরোধী মনোভাব পাঞ্জশিরকে অনেকটা অজেয় দুর্গে পরিণত করেছে।