আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন আইএসএস অপূরণীয় ক্ষতির মুখে বলে সতর্ক করেছে রাশিয়া। জানিয়েছে, মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে পড়ায় একে একে নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে বিভিন্ন সরঞ্জাম ও মহাকাশ স্টেশনের অংশ।
মহাকাশ প্রযুক্তিবিষয়ক প্রতিষ্ঠান এনার্জিয়ার প্রধান প্রকৌশলী ভ্লাদিমির সোলোভায়োভের বরাত দিয়ে বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়, আইএসএসের রাশিয়ার অংশের কমপক্ষে ৮০ শতাংশ সরঞ্জাম ও যন্ত্রাংশের মেয়াদ পার হয়ে গেছে।
বেশ কয়েকটি ফাটল আবিষ্কার হয়েছে, যেগুলো সময়ের সঙ্গে বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে বলেও সতর্ক করেন ওই কর্মকর্তা।
২০২৫ সালের পর আইএসএস ছেড়ে বেরিয়ে যেতে পারে রাশিয়া। আগেও মহাকাশ স্টেশনটির যন্ত্রাংশের ত্রুটি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে দেশটি।
যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার যৌথ উদ্যোগের অংশ হিসেবে ১৯৯৮ সালে মহাকাশ স্টেশনটি নির্মাণ করেন বিজ্ঞানীরা। পরে এতে যোগ দেয় কানাডা, জাপান ও ইউরোপের কয়েকটি দেশ। প্রাথমিক নকশায় স্টেশনটির মেয়াদ ছিল ১৫ বছর।
আইএসএসের রাশিয়ার অংশের প্রধান নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা সোলোভায়োভ গত বছরও স্টেশনটির পুরোনো যন্ত্রপাতি পরিবর্তনের অনুরোধ করেছিলেন।
সাবেক এই নভোচারী জানান, রাশিয়ার জারিয়া কার্গো মডিউলে বড় ধরনের ফাটল ধরা পড়েছে। ১৯৯৮ সালে স্টেশনে পাঠানো এই মডিউল আইএসএসের সবচেয়ে পুরোনো মডিউলগুলোর একটি। বর্তমানে এটি জিনিসপত্র মজুত করার জন্য ব্যবহার করা হয়।
তিনি বলেন, ‘ফাটলটির ধরন ভালো নয়। প্রতি মুহূর্তে এটি বড় হচ্ছে।’
রাশিয়ার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা রসকসমস গত বছর জানিয়েছিল, যন্ত্রাংশের অবকাঠামোগত শৈথিল্যের অর্থ হলো ২০৩০ সালের পর আর কর্মক্ষম থাকবে না আইএসএস।
গত কয়েক বছরে বেশ কয়েক দফায় মহাকাশ গবেষণার বাজেট কাটছাঁট করেছে রাশিয়া। আইএসএসে দেশটির অংশে এ সময়ে বারবার বিভিন্ন ত্রুটি ধরা পড়েছে।
গত জুলাইয়েই নওকা মডিউলে ত্রুটির জেরে মুহূর্তের জন্য নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বিকল হয়ে পড়েছিল পুরো মহাকাশ স্টেশন। আইএসএসের ক্রুদের থাকার জায়গা হিসেবে ব্যবহৃত ভেজদা সার্ভিস মডিউলে ২০১৯ সাল থেকে বেশ কয়েকবার ফুটো দিয়ে বাতাস বেরিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
এসব ঘটনার মধ্যেই আগামী বছর চাঁদে ও শুক্র গ্রহে মহাকাশযান পাঠানোর উচ্চাভিলাষী অভিযান ঘোষণা করেছে মস্কো।