বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র নিয়ে তালেবানের শোভাযাত্রা

  •    
  • ২ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১২:২৭

লোকচক্ষুর আড়ালে থাকা তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা হাইবাতুল্লাহ আখুনজাদা কান্দাহারে থাকেন বলে গত রোববার জানিয়েছে সংগঠনটি। শোভাযাত্রার সময় কান্দাহারের ক্রিকেট মাঠে খেলোয়াড়দের বসার জায়গায় দেখা গেছে তালেবান নেতাদের। অনেক বছর পর আখুনজাদাও সেখানে প্রকাশ্যে আসতে পারেন বলে গুজব ছড়িয়েছিল, যা শেষ পর্যন্ত সত্য হয়নি।

আফগানিস্তানের দ্বিতীয় বৃহৎ শহর কান্দাহারে অস্ত্র নিয়ে শোভাযাত্রা করেছে তালেবান যোদ্ধারা। বুধবারের এ মিছিলে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সরঞ্জাম ও অস্ত্র প্রদর্শন করা হয়, যা গত কয়েক দিনে জব্দ করেছে সংগঠনটি।

দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে জানানো হয়, দক্ষিণাঞ্চলীয় শহরটিতে তালেবানের শীর্ষ নেতাদের উপস্থিতিতে প্রদর্শন করা হয় হামভি, এমআরএপিসের মতো দামি সাঁজোয়া যান।

শোভাযাত্রা শুরুর আগে জব্দ হামভির পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় তালেবান যোদ্ধাদের। কান্দাহারের মহাসড়কে সবুজ রঙের অনেকগুলো গাড়িকে এক সারিতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। অনেকগুলোতে তালেবানের সাদা-কালো পতাকা যুক্ত ছিল।

অস্ত্রবাহী অত্যাধুনিক সাঁজোয়া যান এম১১৫১ হামভি। একেকটির দাম প্রায় সোয়া দুই লাখ ডলার। বিশেষ অস্ত্র ও আরোহীদের সুরক্ষার উদ্দেশ্যে নির্মিত হামভি অনেকটা লাইফগার্ডের মতো কাজ করে।

২০১৭ সালে আফগানিস্তানে চার হাজার ৭০০ হামভির একটি চালান পাঠিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র, যার প্রায় পুরোটাই এখন তালেবানের নিয়ন্ত্রণে।

যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোট ও আফগান সেনাবাহিনী গত ২০ বছরের যুদ্ধে তালেবানের বিরুদ্ধে যেসব মাল্টি-পারপাস ট্রাক ব্যবহার করেছে, সেগুলোও তালেবান যোদ্ধারা জব্দ করেছে।

ভারী বন্দুক ও মেশিন গানসহ যোদ্ধাদের নিয়ে ট্রাকের একটি বহরও ছিল মিছিলে।

কান্দাহারের আকাশে গত কয়েক দিনে কমপক্ষে একটি ব্ল্যাক হক হেলিকপ্টার উড়তে দেখা গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, তালেবানের দক্ষ পাইলট না থাকায় সেটি চালাচ্ছিল আফগান সেনাবাহিনীরই সাবেক কোনো পাইলট।

সামরিক পরিবহন ও হামলা চালাতে ব্যবহৃত সাঁজোয়া হেলিকপ্টার ব্ল্যাক হক। বিশ্বের অন্যতম দামি এ হেলিকপ্টারের বাজারমূল্য ৫৯ লাখ ডলার। এতে থাকা অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে পাইলট লক্ষ্যবস্তু শনাক্ত করতে পারে এবং রাইফেল ও লেজারচালিত ক্ষেপণাস্ত্রে হামলা চালাতে পারে।

দিন ও রাতের অভিযানে অনেক দূর থেকেও পাইলটের অবস্থান ও লক্ষ্যবস্তুর দূরত্ব সঠিকভাবে নির্ধারণে সক্ষম এটি।

১২ আগস্ট আফগানিস্তানের দ্বিতীয় বৃহৎ শহর কান্দাহারের নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান, যেখানে ছিল যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান সামরিক ঘাঁটি। ওই ঘাঁটি থেকে কমপক্ষে একটি ইউএইচ-৬০ ব্ল্যাক হক জব্দ করেছে তালেবান যোদ্ধারা।

অনলাইনে প্রকাশিত ফুটেজে তালেবানের পতাকা সংবলিত আরেকটি হেলিকপ্টারও দেখা গেছে শোভাযাত্রার ওপরে।

পশতু আদিবাসী অধ্যুষিত কান্দাহারেই জন্ম তালেবানের। এখান থেকেই সংগঠনটির উত্থান শুরু নব্বইয়ের দশকে।

লোকচক্ষুর আড়ালে থাকা তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা হাইবাতুল্লাহ আখুনজাদা কান্দাহারে থাকেন বলে গত রোববার জানিয়েছে সংগঠনটি।

শোভাযাত্রার সময় কান্দাহারের ক্রিকেট মাঠে খেলোয়াড়দের বসার জায়গায় দেখা গেছে তালেবান নেতাদের। অনেক বছর পর আখুনজাদাও সেখানে প্রকাশ্যে আসতে পারেন বলে গুজব ছড়িয়েছিল, যা শেষ পর্যন্ত সত্য হয়নি। প্রধান অতিথি ছিলেন কান্দাহারে তালেবানের নতুন গভর্নর।

আফগান সেনাবাহিনীর শক্তি বাড়াতে সাঁজোয়া যান, ড্রোন, হেলিকপ্টার আর উড়োজাহাজসহ গত কয়েক বছরে ৩২ হাজার অস্ত্র দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর দেশটিতে যুক্তরাষ্ট্রের শত-কোটি ডলারের এসব অস্ত্র ও অত্যাধুনিক সামরিক সরঞ্জাম এখন তালেবানের হাতে।

গত ২০ বছরে আফগান সেনাবাহিনীর সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের প্রায় পুরোটাই যুক্তরাষ্ট্রের কারিগরি সহযোগিতা ও সামরিক সরঞ্জামনির্ভর ছিল।

সরকারি হিসাব অনুযায়ী, শেষ কয়েক বছরেই আফগান সেনাবাহিনীকে সাত হাজারের বেশি মেশিন গান, ২০ হাজার গ্রেনেড, চার হাজার ৭০০ সাঁজোয়া যান, হেলিকপ্টার ও ছোট বিমানসহ দুই শতাধিক আকাশযান, ড্রোনের মতো সরঞ্জাম সরবরাহ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

এ সময়ে আফগানিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীগুলোকে গড়ে তোলা ও প্রশিক্ষণে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যয় ছিল আট হাজার ৩০০ কোটি ডলার।

এ বিভাগের আরো খবর