ভারতে গরুকে জাতীয় পশু হিসেবে ঘোষণা করে তা রক্ষা করা হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য মৌলিক অধিকার হওয়া উচিত বলে আদেশ দিয়েছে দেশটির এলাহাবাদ হাইকোর্ট।
ভারতীয় সংস্কৃতিতে প্রাণীটি গুরুত্বপূর্ণ এবং সারা দেশে একে গো-মাতা হিসেবে দেখা হয় বলে বুধবার দেয়া ওই আদেশে জানান বিচারক।
সেই সঙ্গে দেশটির উত্তর প্রদেশের সাম্বহাল জেলার ৫৯ বছর বয়সী এক মুসলমান ব্যক্তির জামিন নাকচ করে দেয় আদালত।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের মার্চে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে গরু জবাইয়ের অভিযোগ তুলে গ্রেপ্তারের পর কারাগারে পাঠানো হয়।
এলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি শেখর কুমার যাদব ১২ পৃষ্ঠার ওই আদেশে বলেন, ‘ভারতীয় প্রাচীন গ্রন্থ বেদ ও মহাভারতে গরুকে খুব গুরুত্বপূর্ণ প্রাণী হিসেবে দেখানো হয়েছে, যা ভারতীয় সংস্কৃতিতে খুব পরিচিত।’
তিনি বলেন, ‘এই দিক থেকে দেখতে গেলে, গরুকে আমাদের জাতীয় প্রাণী ঘোষণা করা উচিত এবং গরু রক্ষা হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য মৌলিক অধিকার হওয়া উচিত। কারণ আমরা জানি যে, যখন কোনো দেশের সংস্কৃতি ও বিশ্বাসে আঘাত লাগে, তখন দেশ দুর্বল হয়ে পড়ে।’
বিচারপতি যাদব তার আদেশে ওই ব্যক্তির জামিন না দিয়ে বলেন, ‘তিনি আগেও গরু জবাই করেছেন এবং সে কারণে সামাজিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে। এমনকি তিনি ছাড়া পেলে আবারও এমন কাজ করতে পারেন বলেই তার জামিন দেয়া হয়নি।’
আদালতের পর্যাবেক্ষণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মৌলিক অধিকার শুধু যারা গো-মাংস খান তাদের নয়, বরং যারা গরুর পূজা করেন এবং অর্থনৈতিকভাবে নির্ভরশীল তাদেরও অধিকার হওয়া উচিত।’
বিচারক সারা দেশে গরুর আশ্রয়ের অবস্থা নিয়ে এবং গরু রক্ষা করতে গিয়ে যারা অন্যের ‘শত্রু’ হিসেবে বিবেচিত হয়েছেন তাদের জন্য ব্যথিত হন।
বিচারক তার আদেশে বলেন, ‘সরকার গরুর দেখাশোনার জন্য আশ্রম নির্মাণ করেছে, সেই সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবেও আশ্রম তৈরি করা হয়েছে। তবে সেগুলোতে যারা দেখভালের দায়িত্বে থাকেন তারা সঠিকভাবে কাজ করেন না।’
ভারতে গরু জবাই ও পরিবহন নিয়ে জেল-জরিমানা ও পিটিয়ে হত্যার বিষয়টি সাম্প্রতিক সময়ে বেশ বেড়েছে।