যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ারে সন্ত্রাসী হামলায় আল-কায়েদার প্রতিষ্ঠাতা ওসামা বিন লাদেনের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ আজ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি বলে মন্তব্য করেছেন তালেবানের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ।
এ কারণে ২০০১ সালে আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক অভিযানের কোনো ন্যায্যতা নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
কাবুল দখলের দুই সপ্তাহেরও কম সময়ে এনবিসিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তালেবান মুখপাত্র এসব মন্তব্য করেন বলে ডনের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
তালেবান মুখপাত্র মুজাহিদ অবশ্য সাক্ষাৎকারে অঙ্গীকার করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্র দেশগুলোর ওপর হামলা চালাতে আল-কায়েদা বা অন্য কোনো সন্ত্রাসী সংগঠনকে আফগানিস্তানের মাটি ব্যবহার করতে দেয়া হবে না।
দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট তালেবান মুখপাত্রের মন্তব্যসংক্রান্ত প্রতিবেদনে বলে, ‘নিউ ইয়র্কের টুইট টাওয়ারে হামলায় বিন লাদেনের সম্পৃক্ততার যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে।
‘২০১১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় নিহত হওয়ার আগ পর্যন্ত ৯/১১-এর পরিকল্পনাকারী হিসেবে লাদেন বিশ্বের মোস্ট ওয়ান্টেড পলাতকের তালিকায় ছিলেন।’
সাক্ষাৎকারে মুজাহিদ বলেন, ‘লাদেন যখন যুক্তরাষ্ট্রের ভাবনার বিষয় হন, তখন তিনি আফগানিস্তানে অবস্থান করছিলেন।
‘৯/১১ হামলায় লাদেনের সংশ্লিষ্টতার কোনো প্রমাণ নেই।’
তিনি বলেন, ‘আমরা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছি, আফগানিস্তানের মাটি কারো বিরুদ্ধে ব্যবহার হবে না।’
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের হামলায় লাদেনের ভূমিকার বিষয়ে ফের জানতে চাওয়া হলে তালেবানের মুখপাত্র বলেন, ‘কোনো প্রমাণ নেই।
‘সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের টানা প্রায় ২০ বছরের যুদ্ধের পরও টুইন টাওয়ারে হামলায় লাদেনের জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেনি ওয়াশিংটন।’
জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদাকে আফগানিস্তানে আশ্রয় দেয়ার কোনো দায় তালেবান স্বীকার করে কি না, জানতে চাইলে মুজাহিদ বলেন, ‘আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধের কোনো ন্যায্যতা নেই। যুদ্ধের অজুহাত সে সময় তৈরি করা হয়েছিল।’
৩১ আগস্টের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সব সেনা প্রত্যাহারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অঙ্গীকার পূরণের বিষয়ে মুজাহিদ বলেন, ‘বিদেশি সেনা প্রত্যাহার প্রায় শেষ। এটি আমাদের জন্য সবচেয়ে আনন্দের মুহূর্ত।’
তালেবান সরকারের বিরুদ্ধে টুইন টাওয়ারে হামলায় সন্দেহভাজন লাদেনকে আফগানিস্তানে আশ্রয়ের অভিযোগ আনেন যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ।
তালেবান লাদেনকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তর করে আফগানিস্তানে আল-কায়েদার কর্মকাণ্ড বন্ধ করার দাবি জানান জর্জ বুশ।
তালেবান যুক্তরাষ্ট্রের ওই দাবি মানতে অস্বীকৃতি জানালে ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোকে সঙ্গে নিয়ে আফগানিস্তানে আক্রমণ করে তালেবানকে ক্ষমতাচ্যুত করে বুশ প্রশাসন।