আফগানিস্তান থেকে বিভিন্ন দেশ তাদের নাগরিক ও দূতাবাসের কর্মীদের ৩০ আগস্টের মধ্যেই সরিয়ে নেয়ার কাজ শেষ করার কথা জানিয়েছে। যদিও ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেয়া আছে।
কাবুল বিমানবন্দরে বোমা হামলায় ৯০ জনেরও বেশি মানুষের প্রাণহানির পর পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর এক কূটনীতিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্সকে এক দিন আগে উদ্ধারকাজ শেষ করার পরিকল্পনার কথা জানান।
তালেবানের সঙ্গে আফগানিস্তানে ন্যাটো জোটের নেতৃত্বদানকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্র যে চুক্তি করেছে সেখানে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত উদ্ধারকাজ শেষ করার সময় বেঁধে দেয়া হয়।
বৃহস্পতিবার কাবুল বিমানবন্দরে দুটি হামলায় ১৩ আমেরিকান সেনাসহ ৯০ জন নিহত হলে উদ্ধার অভিযান একদিন আগে শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে দেশগুলো।
এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্র দেশগুলো জানায়, তারা ৩১ আগস্টের আগেই উদ্ধার অভিযান শেষ করতে দ্রুততার সঙ্গে কাজ করছে।
বিবিসির খবরে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের এখনও দেড় হাজার নাগরিক আফগানিস্তানে রয়েছে।
যুক্তরাজ্য বলছে, তাদের এখনও ৪০০ নাগরিক আফগানিস্তান ছাড়ার অপেক্ষায় আছে।
আরেক মিত্র দেশ জার্মানির ভাষ্য, তাদের দুই শতাধিক নাগরিক কাবুল ছাড়তে অপেক্ষা করছে।
ফ্রান্সের ঠিক কতজন আফগানিস্তান ছাড়তে অপেক্ষায় আছেন সেটি জানা যায়নি। দেশটি জানিয়েছে, তারা শুক্রবার সন্ধ্যার মধ্যেই তাদের সব নাগরিক ও দূতাবাস কর্মীদের সরিয়ে নিতে পারবে।
হোয়াইট হাউস জানায়, ১৫ আগস্টের পর থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কাবুল বিমানবন্দর হয়ে ১ লাখ মানুষকে বিভিন্ন দেশে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার দেশটি থেকে ১৩ হাজার মানুষকে সরিয়ে নেয়া হয়।
তবে আইএসের হামলার পর ঠিক কত জনকে সরিয়ে নেয়া গেছে সে বিষয়ে কিছু জানায়নি হোয়াইট হাউস।
এই প্রক্রিয়ায় বিশ্বের শতাধিক দেশের প্রচেষ্টা ছিল বলে জানায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দপ্তর।
যুক্তরাষ্ট্র এখন কাবুল বিমানবন্দরে ৫ হাজার ২০০ সেনা রেখেছে উদ্ধারকাজ পরিচালনা করতে।
বিস্ফোরণের পর সাময়িকভাবে উদ্ধারকাজে ব্যাঘাত ঘটলেও তারপর থেকে উদ্ধারকাজ আগের মতোই অব্যাহত থাকবে।
১৫ আগস্ট কাবুল দখলের পর আফগানিস্তানের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান। সশস্ত্র গোষ্ঠীটি ক্ষমতায় আসার পর দেশটি থেকে নিজেদের নাগরিকদের সরিয়ে নেয়ার কাজ শুরু করে পশ্চিমাসহ বিভিন্ন দেশ।
কাবুল বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে উদ্ধার কাজ করছিল যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী। মিত্র দেশগুলোর সময় বাড়ানোর চাপ থাকলেও ৩১ আগস্টের মধ্যে উদ্ধার কাজ শেষ করার ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন।
আগে থেকেই বিমানবন্দরটিতে হামলার আশঙ্কা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। সে জন্য আফগান ও নিজেদের নাগরিকদের সতর্কও করে। বৃহস্পতিবার সকালেও বিমানবন্দরে হামলা হতে পারে বলে সতর্ক করে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। তাদের নাগরিকদের বিমানবন্দরে না আসার অনুরোধও করে।
বিমানবন্দর ও আশপাশের কিছু এলাকা থেকে আফগানদের সরিয়ে দিয়ে খালিও করা হয় এ দিন। বিমানবন্দরের অ্যাবে গেটের পাশে যে বিস্ফোরণ হয়, সে সময় সেখানে অন্ততত চার থেকে পাঁচ শ মানুষ ছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।