বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ডলার উড়লেও হাল ফেরেনি আফগানিস্তানের

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ২০ আগস্ট, ২০২১ ২১:০২

আফগানিস্তান পুনর্গঠনের কাজে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পে বরাদ্দ করা যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ কী কী ভাবে খরচ করা হচ্ছে, তা প্রাসঙ্গিক হচ্ছে কি না, প্রয়োজনের চেয়ে বেশি অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে কি না, ২০০৮ সাল থেকে সেই সব খতিয়ে দেখতে শুরু করে সিগার।

আফগানিস্তানের পুনর্গঠনে গত দুই দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্রের বরাদ্দ করা কয়েক হাজার কোটি ডলার কোনো কাজে লাগেনি। আফগান নাগরিকদের ভাগ্য পরিবর্তনে কোনো ভূমিকা রাখেনি ওই বিপুল অর্থ।

যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক সংস্থা ‘স্পেশাল ইন্সপেক্টর জেনারেল ফর আফগানিস্তান রিকনস্ট্রাকশনের (সিগার)’ রিপোর্টে এসব তথ্য জানানো হয়।

আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, মুঠোয় থাকবে বলে আফগানিস্তানকে ঢেলে সাজানোর লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কয়েক হাজার কোটি ডলার এসেছে গত ২০ বছরে।

তবে আফগানিস্তানে মোতায়েন করা যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী ও অন্য প্রশাসনিক কর্মকর্তারা ওই সব অর্থ নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতি করেন। ​

ফলে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ভাবমূর্তি তৈরি হয়নি আফগান নাগরিকদের কাছে। কয়েক হাজার কোটি ডলার নয়ছয় হয়েছে। আফগানিস্তানের উন্নয়ন হয়নি ছিটেফোঁটাও।

আফগানিস্তান পুনর্গঠনের কাজে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পে বরাদ্দ করা যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ কী কী ভাবে খরচ করা হচ্ছে, তা প্রাসঙ্গিক হচ্ছে কি না, প্রয়োজনের চেয়ে বেশি অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে কি না, ২০০৮ সাল থেকে সেই সব খতিয়ে দেখতে শুরু করে সিগার।

সিগার দেখেছে, গত ১৩ বছর ধরে আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের বরাদ্দ করা বিপুল অর্থের বেশির ভাগটাই ফুৎকারে উড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। তা আফগানিস্তান পুনর্গঠনের কোনো কাজে লাগেনি।

গত দুই দশকে আফগানিস্তান পুনর্গঠনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের বরাদ্দ করা বিপুল অর্থের নয়ছয় হয়েছে, এমন অন্তত ১০টি প্রকল্পকে চিহ্নিত করেছে সিগার।

কোটি কোটি ডলার খরচ করে আফগান বিমানবাহিনীর জন্য কেনা হয়েছে দেড় ডজনের বেশি পরিবহন বিমান।

বছরের পর বছর ওই বিমানগুলোকে কাবুল বিমানবন্দর এলাকায় রেখে দেয়া হয়েছে। কাজে লাগানো হয়নি।

বেশির ভাগ বিমানেই আগাছা জন্মেছে। ভেঙেও গেছে বহু বিমান। সেগুলো পরে ফেলে দেয়া জিনিসপত্রের দরে বিক্রি করা হয়েছে।

আধুনিক সড়ক বানানোর এক মাসের মধ্যেই রাস্তা ফেটে দুভাগ হয়ে গেছে, এমন প্রকল্পও রয়েছে। সড়ক হয়ে পড়েছে চলাচলের অনুপযোগী।

তালেবানসহ অন্য জঙ্গিদের ধোঁকা দেয়ার জন্য আফগান সেনাদের জন্য ২ কোটি ৮০ লাখ ডলার ব্যয়ে নতুন পোশাক বানিয়ে পাঠিয়েছিল পেন্টাগন।

গত ২০ বছরে কোনো আফগান সেনা ওই সব পোশাক পরেনি।

আবার কোথাও আফগান সেনাদের প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বরাদ্দ করা পাঁচ লাখ ডলারে বিশাল ভবন নির্মিত হওয়ার চার মাসের মধ্যেই দেয়াল ফুঁড়ে জল ঢুকে সেই ভবনে কাজকর্ম অসম্ভব করে দেয়। ভেঙে পড়েছে ইট, খসে পড়েছে বালি, সুরকি।

সিগারের প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রকল্পগুলোর অন্যতম আফগান বিমানবাহিনীর জন্য ইতালি থেকে আনা পরিবহন বিমান।

৫৪ কোটি ৯০ লাখ ডলার মূল্যের ২০টি পরিবহন বিমান ‘জি২২২’ ইতালি থেকে আনা হয়েছিল কাবুলে।

তবে এগুলোর মধ্যে ১৬টিতেই পরে আগাছা জন্মায়। কোনোটি এক পাউন্ড আবার কোনোটি সর্বোচ্চ ৩২ হাজার ডলারে বিক্রি করে দিতে হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের বরাদ্দ করা ১৭ কোটি ৬০ লাখ ডলারে যে আধুনিক সড়কপথ বানানো হয়েছিল গারদেজ শহর থেকে খোস্ত প্রদেশ পর্যন্ত, কাজ শেষ হওয়ার এক মাসের মধ্যেই সেই রাস্তায় এত বড় বড় ফাটল দেখা দেয় যে তা দুর্গম হয়ে পড়ে।

গাঁজা চাষ বন্ধ করার জন্য গত ১৫ বছরে আফগানিস্তানে ৮৬০ কোটি ডলার অর্থ বরাদ্দ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র।

গাঁজা উৎপাদনে আফগানিস্তান এখনও বিশ্বের প্রথম তিনটি দেশের অন্যতম।

১০ লাখ আফগান নাগরিকের জন্য একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়ে তুলতে যুক্তরাষ্ট্র বরাদ্দ করেছিল ১১ কোটি ৬০ লাখ ডলার।

সেই বিদ্যুৎকেন্দ্রের একাংশ এখনও নির্মিত হয়নি। বাকি অংশে উৎপাদন আদৌ চালু হবে কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে।

এ বিভাগের আরো খবর