কট্টর ইসলামপন্থি গোষ্ঠী তালেবানের হাতে যাওয়ার আশঙ্কায় নিজেদের বিভিন্ন ব্যাংকে জমা থাকা আফগানিস্তানের বিপুল পরিমাণ অর্থ আটকে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
বুধবারওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, বাইডেন প্রশাসনের হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী জেনেট ইয়েলেন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এছাড়া বিষয়টি নিয়ে আলোচনায়ও বসতে যাচ্ছে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বাইডেন প্রশাসনের এক কর্মকর্তা বিবৃতিতে বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে থাকা আফগানিস্তানের কোনো সম্পদই তালেবানের হাতে যাবে না।’
ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে এখনই প্রকাশ্যে কিছু বলতে চায় না সরকার।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) এপ্রিলের তথ্য অনুযায়ী, আফগানিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে প্রায় নয় দশমিক চার বিলিয়ন ডলার জমা আছে। এটি দেশটির বার্ষিক অর্থনৈতিক আয়ের এক-তৃতীয়াংশ।
রিজার্ভে থাকা বড় অঙ্কের ডলার এই মুহূর্তে আফগানিস্তানে নেই। এর বেশিরভাগ রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। তবে দেশটিতে কী পরিমাণ অর্থ জমা রয়েছে সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই।
সোমবার এক টুইট বার্তায় ডা আফগানিস্তান ব্যাংকের (ডাব) নির্বাহী প্রধান আজমল আহমাদি জানিয়েছেন, তিনি শুক্রবারে জানতে পেরেছেন যে, তালেবানের হাতে যাওয়া ঠেকাতে ডলার পাঠানো বন্ধ করবে যুক্তরাষ্ট্র।
ডাবের কাছে প্রায় সাড়ে নয় বিলিয়ন ডলার রয়েছে। এর বড় অংশ জমা রয়েছে নিউ ইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ও যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে।
তালেবানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক নিষেধাজ্ঞা গোষ্ঠীটির ক্ষমতা দখলকে কঠিন করে তুলবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
বিশ বছর ধরে আফগানিস্তানে সামরিক উপস্থিতি জারি রেখেছিল যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা। দেশটিতে ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ নামের কথিত যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় আড়াই হাজার সেনা নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে যুদ্ধের শিকার হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় আড়াই লাখ আফগান নাগরিক।
যুক্তরাষ্ট্র ৩১ আগস্টের মধ্যে নিজেদের সব সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণার পর রোববার আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলসহ পুরো দেশের দখল নিয়েছে তালেবান। এখন সরকার গঠনের জন্য বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে কট্টর ইসলামপন্থি গোষ্ঠীটি।