করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে যখন স্কুলের পড়াশোনা শিকেয় উঠেছে, তখন ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনা বজায় রাখার নতুন মডেল তৈরি করে রাষ্ট্রপতি পুরস্কার পাচ্ছেন পশ্চিমবঙ্গের মালদা শোভানগর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক হরিস্বামী দাস।
গত বছর দেশে শাটডাউন শুরু হলে হরিস্বামী সহশিক্ষকদের নিয়ে পড়ুয়াদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তারা যাতে মানসিকভাবে ভেঙে না পড়ে, তার জন্য প্রয়োজনীয় কাউন্সেলিং করেন।
চলতি বছর হাইব্রিড পদ্ধতিতে স্কুলের পঠন-পাঠন শুরু করেন হরিস্বামী।
অর্ধেক ছাত্র-ছাত্রী স্কুলের ক্লাসরুমে আর বাকিরা অনলাইনে ক্লাস করতে পারে এ পদ্ধতিতে।
ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির প্রতিটি বইয়ের কিউআর কোড তৈরি করেন হরিস্বামী।
এতে প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রী যেকোনো জায়গায় একটি মোবাইল থেকে যেকোনো বই পড়তে পারছে।
এই হাইব্রিড লার্নিং পদ্ধতির কথা ভারতের কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে জানান হরিস্বামী। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের হরিস্বামীর এ পদ্ধতি পছন্দ হয়।
ভারতজুড়ে শিক্ষা ক্ষেত্রে অবদানের জন্য ৪৪ শিক্ষক এ বছর রাষ্ট্রপতি পুরস্কার পাচ্ছেন।
পশ্চিমবঙ্গ থেকে একমাত্র হরিস্বামীই এ পুরস্কার পেতে যাচ্ছেন।
বুধবার দিল্লি থেকে প্রকাশিত তালিকায় নিজের নাম দেখার পর হরিস্বামী বলেন, ‘স্কুল বন্ধ থাকলেও অনলাইনে ক্লাস, সেমিনার সবকিছু হয়েছে।
‘সারা বছর বিভিন্ন সামাজিক কাজ করেছি আমরা। তার স্বীকৃতি মিলল। ভালো লাগছে।’
প্রধান শিক্ষক হিসেবে হরিস্বামী দায়িত্ব নেয়ার পর মালদার স্কুলটি ২০১৫ সালে ‘নির্মল বিদ্যালয়’ পুরস্কার পায়। ২০১৮ সালে ‘শিশু মিত্র’ পুরস্কার পায়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় হরিস্বামীকে স্কুলে শিক্ষাসামগ্রী তৈরির জন্য দুবার জাতীয় পুরস্কার দেয়। আর এবার তিনি পাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি পুরস্কার।
করোনার বিধিনিষেধের জন্য গত বছরের মতো এবারও এ পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান ভার্চুয়ালি হবে।
৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবসে জেলাশাসকের দপ্তরে বসে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছ থেকে এ পুরস্কার ভার্চুয়ালি নেবেন হরিস্বামী।