আফগানিস্তানের সশস্ত্র গোষ্ঠী তালেবানের আগ্রাসনের মুখে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি। পালানোর সময় তিনি চার গাড়ি এবং একটি হেলিকপ্টার ভরে অর্থ নিয়ে গেছেন বলে সংবাদমাধ্যমে খবর এসেছে।
কাবুলে অবস্থিত রাশিয়ার দূতাবাসের বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়, গাড়ি-হেলিকপ্টারে জায়গা ছিল না বলে বাধ্য হয়ে কিছু অর্থ ফেলে যেতে হয়েছে ঘানিকে।
পলাতক ঘানি বর্তমানে কোথায় অবস্থান করছেন, তা এখনও অজানা। তবে রোববার দেশ ছাড়ার কথা জানিয়েছেন তিনি নিজেই। তার দাবি, রক্তপাত এড়াতেই দেশ থেকে পালিয়েছেন তিনি।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবর, প্রথমে প্রতিবেশী তাজিকিস্তানে গেলেও সেখানে আশ্রয় না পেয়ে আপাতত ওমানে আছেন ঘানি।
কোনো প্রতিরোধ ছাড়াই রোববার রাজধানী কাবুল দখল করে তালেবান যোদ্ধারা।
আফগানিস্তানের সবকিছু তালেবানের নিয়ন্ত্রণে চলে যাওয়ায় দেশটিতে কূটনৈতিক মিশন স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রসহ আমেরিকা-ইউরোপের সব দেশ। ব্যতিক্রম রাশিয়া ও চীন।
মস্কো জানিয়েছে, কাবুলে দূতাবাস চালু রাখবে তারা। তালেবান শাসকদলের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের বিষয়েও আশাবাদী দেশটি।
আর চীন জানিয়েছে, আগের মতোই আফগানিস্তানে তাদের দূতাবাস কার্যক্রম চালিয়ে যাবে। দেশটিতে অন্তর্ভুক্তিমূলক একটি ইসলামি সরকারেও সায় রয়েছে বেইজিংয়ের।
তবে এখনই তালেবানকে আফগানিস্তানের সরকার হিসেবে স্বীকৃতি দেবে না মস্কো। জানিয়েছে, আপাতত তালেবানের আচরণ পর্যবেক্ষণ করবে তারা।
কাবুলে অবস্থিত রাশিয়ার দূতাবাসের মুখপাত্র নিকিতা ইশশেঙ্কো বলেন, ‘যেভাবে ঘানি দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন, তাতে আফগানিস্তানের নির্বাচিত সরকারের পতনের কারণ এখন স্পষ্ট।’
তিনি আরও বলেন, ‘চারটি গাড়ি ভর্তি করে নগদ অর্থ সঙ্গে নিয়েছেন ঘানি। এরপর হেলিকপ্টারেও ঠেসে অর্থ নেয়া হয়েছে। তারপরেও জায়গা সংকটে নগদ অর্থের অনেকটাই ফেলে যেতে হয়েছে তাকে।’
নিকিতা জানান, এ দৃশ্যের সাক্ষী ছিলেন তিনি নিজেই।
তবে কী পরিমাণ অর্থ নিয়ে ঘানি পালিয়েছেন, তা জানা যায়নি।
আফগানিস্তানে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিশেষ প্রতিনিধি জামির কাবুলোভ বলেন, ‘আশা করছি, রাষ্ট্রীয় কোষাগারের সব অর্থ নিয়ে পালিয়ে যাননি প্রেসিডেন্ট। আফগান জনসাধারণের জন্য কী পরিমাণ অর্থ তিনি ছেড়ে গেছেন, তা এখনও অস্পষ্ট। বাজেটের খুব সামান্য পরিমাণই হয়তো আফগানদের ভাগ্যে জুটবে।’