দেশের ৭৫তম স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে গিয়ে করোনার দ্বিতীয় তরঙ্গের কথা উল্লেখ করলেন ভারতের প্রেসিডেন্ট রামনাথ কোবিন্দ।
শনিবার ভাষণ দিতে গিয়ে করোনায় মৃত ব্যক্তিদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এত মৃত্যু আমাকে যন্ত্রণা দিয়েছে। আমি মৃতদের পরিবারকে বলতে চাই যে আমি আপনাদের সঙ্গে আছি।’
একই সঙ্গে তিনি জানান, করোনা অতিমারির কারণে গতবারের মতো এ বার স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে কোনো আড়ম্বর হবে না।
করোনা পরিস্থিতি নিয়ে সাধারণ মানুষকে সতর্ক করেন ভারতের প্রেসিডেন্ট। দেশবাসীকে কোভিড বিধি মেনে চলার কথা বলেন তিনি। মনে করিয়ে দেন, এখনও করোনা চলে যায়নি। ‘রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, ভ্যাকসিনই করোনার বিরুদ্ধে সব থেকে বড় সুরক্ষা কবচ। অতিমারির অভিজ্ঞতা আমাদের শিখিয়েছে যে সতর্কতা অবলম্বন করা কতটা জরুরি।’
প্রথম সারির যোদ্ধাদের প্রশংসা করে কোবিন্দ বলেন, ‘আমি চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের ও অন্য করোনা যোদ্ধাদের সাধুবাদ জানাই। তাদের কঠোর পরিশ্রমই দেশকে সেকেন্ড ওয়েভ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করেছে। তিনি আরও বলেন, ‘এই যোদ্ধাদের জন্যই যত প্রাণ হারিয়েছে, তার থেকে বেশি প্রাণ বাঁচানো সম্ভব হয়েছে। সম্মিলিতভাবে গোটা দেশ করোনার এই তরঙ্গকে দুর্বল করতে পেরেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।’
ভারতজুড়ে চলা টিকাকরণ প্রক্রিয়া সম্পর্কে কোবিন্দ জানান, ‘ভারতে বিশ্বের সর্ববৃহৎ টিকাকরণ প্রক্রিয়া চলছে। এখনও পর্যন্ত ৫০ কোটির বেশি মানুষকে ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে।’
তিনি দেশবাসীর উদ্দেশে বলেন, ‘আমি অনুরোধ করছি, প্রোটোকল মেনে যত দ্রুত সম্ভব ভ্যাকসিন নিন ও অন্যদের নেয়ার কথা বলুন।’ তিনি আরও জানান, অতিমারি শুধু মানুষের স্বাস্থ্য নয়, অর্থনীতির ওপরও প্রভাব ফেলে। প্রেসিডেন্ট আশ্বস্ত করে বলেন, ‘সরকার দরিদ্র ও নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষের সমস্যা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের অবস্থা সম্পর্কেও সচেতন কেন্দ্র।’
প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘জম্মু -কাশ্মীরে নতুন ভোর উঠছে। সরকার গণতন্ত্র এবং আইনের শাসনে বিশ্বাসী সব অংশীদারের সঙ্গে পরামর্শের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। আমি জম্মু ও কাশ্মীরের জনগণকে, বিশেষ করে তরুণদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, এই সুযোগটি কাজে লাগাতে এবং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাদের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে কাজ করতে।
উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নাইডু বলেছেন, ‘আমরা যখন স্বাধীনতার ৭৫তম বছরে পদার্পণ করছি, আসুন আমরা আমাদের বীর নেতাদের অসংখ্য বীরত্বপূর্ণ আত্মত্যাগকে স্মরণ করি, যারা দেশকে স্বাধীন করতে সফল হয়েছিলেন এবং আমাদের স্বপ্নের ভারত গড়ার জন্য সংগ্রাম করার সংকল্প করেছিলেন। আমাদের সকল নাগরিকের ন্যায়বিচার, স্বাধীনতা, সমতা এবং ভ্রাতৃত্ববোধের সুরক্ষার জন্য মহান সাংবিধানিক আদর্শ অর্জনের লক্ষ্যে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’