পাকিস্তান সরকার ও সংবাদমাধ্যমের চাপ এবং বিক্ষোভের মুখে ৯ বছর বয়সী হিন্দু ধর্মাবলম্বী সেই ছেলের বিরুদ্ধে ব্লাসফেমি আইনে করা মামলা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছে পুলিশ।
দ্য গার্ডিয়ানের বৃহস্পতিবারের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ধর্মীয় সম্প্রীতিবিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি তাহির মেহমুদ আশরাফি বলেন, ‘ছেলেটির বিরুদ্ধে করা মামলার কোনো ভিত্তি নেই।’
তিনি বলেন, ‘ওই ছেলের নামে মামলা করা পুলিশ কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
‘দেশে বসবাসরত সংখ্যালঘুরা সংখ্যাগরিষ্ঠের মতোই সমান অধিকারের দাবিদার।’
আশরাফি বলেন, ‘ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের প্রার্থনার জায়গায় হামলার অনুমোদন দেয় না ইসলাম।’
গত সপ্তাহে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের রহিম ইয়ার খান জেলার ভং শহরে এক গণেশ মন্দিরে হামলা চালায় একদল মুসলমান।
ওই সময় মন্দিরের গণেশ মূর্তি ভাঙচুর করে হামলাকারীরা। এ ছাড়া মন্দিরের বিভিন্ন অংশও সে সময় ভেঙে ফেলা হয়।
হিন্দু ধর্মাবলম্বী ৯ বছরের এক ছেলেকে ব্লাসফেমি মামলায় আদালত জামিন দেয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে তারা এ কাজ করে।
স্থানীয় মুসলমানদের একাংশের অভিযোগ, ওই ছেলে মাদ্রাসার লাইব্রেরিতে প্রস্রাব করেছিল।
২৪ জুলাই দারুল উলুম আরবিয়া তেলিমুল কোরআন মাদ্রাসার হাফেজ মোহাম্মদ ইব্রাহিমের অভিযোগের ভিত্তিতে ছেলেটির বিরুদ্ধে মামলা করে ভং পুলিশ। পাকিস্তান দণ্ডবিধির ২৯৫-এ ধারায় মামলাটি হয়।
মামলার পর মাদ্রাসা প্রশাসনের কাছে ক্ষমা চান স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের বয়োজ্যেষ্ঠরা। তাদের ভাষ্য, আসামি অপ্রাপ্তবয়স্ক এবং মানসিক প্রতিবন্ধী।
এদিকে ভেঙে দেয়া মন্দির মেরামত করে মঙ্গলবার স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে ফিরিয়ে দেয় স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
রহিম ইয়ার খান জেলা প্রশাসক খুররাম শাহজাদ জানান, মন্দিরটিতে হিন্দু সম্প্রদায় কয়েক দিনের মধ্যে প্রার্থনা শুরু করতে পারবে। এ ছাড়া ওই এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। পরিস্থিতিও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
১৯৯০ সালের পর পাকিস্তানে বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে ব্লাসফেমি আইনে মামলা হয়।
মামলায় অভিযুক্তদের মধ্যে কমপক্ষে ৭৯ জনকে হত্যা করে বিক্ষুব্ধ লোকজন। এদের মধ্যে অভিযুক্ত, তাদের পরিবার, আইনজীবী এমনকি এক বিচারকও রয়েছেন।