মাত্র চার দিনে আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলে ছয়টি প্রাদেশিক রাজধানী দখলে নিয়েছে তালেবান।
ওই শহরগুলোর লাখ লাখ বাসিন্দা সংগঠনটির ভয়ে ঘর ছেড়ে অপেক্ষাকৃত নিরাপদ স্থান রাজধানী কাবুলসহ অন্যান্য শহরে পালাচ্ছেন।
তালেবানের লক্ষ্য এখন উত্তরাঞ্চলের সবচেয়ে বড় শহর ও বালখ প্রদেশের রাজধানী মাজার-ই-শরিফ দখল করা।
মাজার-ই-শরিফ সশস্ত্র সংগঠনটির হাতে চলে গেলে তালেবানবিরোধী পুরো উত্তরাঞ্চল থেকে নিয়ন্ত্রণ একেবারেই হারাবে আফগান সরকার।
পশতুভাষী আফগানিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলীয় কান্দাহার ও হেলমান্দ প্রদেশে আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর তীব্র প্রতিরোধের মুখে আপাতত ওই দুই প্রদেশ থেকে হাত গুটিয়েছে তালেবান।
চলতি মাসের শেষের দিকে আফগানিস্তান থেকে নিজেদের সব সেনা সরিয়ে ফেলছে যুক্তরাষ্ট্র। এর মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ার দেশটিতে দীর্ঘ প্রায় ২০ বছরের যুদ্ধের ইতি টানছে ওয়াশিংটন।
অবশ্য তালেবানকে যুদ্ধবিরতিতে রাজি করাতে আফগানিস্তানে নিয়োজিত যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত জালমে খলিলজাদকে চলতি সপ্তাহে কাতারে পাঠাচ্ছে ওয়াশিংটন।
সেখানে তালেবানের সঙ্গে খলিলজাদের কয়েক ধাপে বৈঠক হবে বলে বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
স্থানীয় সময় সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, আফগানিস্তানে সামরিক আক্রমণ থামাতে তালেবানকে জোর দেবেন খলিলজাদ।
আফগানিস্তানের প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, চীন ও ইরানের প্রতিনিধিরাও ওই সব বৈঠকে থাকবেন।
তবে পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কিরবি স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, আফগানিস্তানে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির মোকাবিলা দেশটির সরকার ও নিরাপত্তা বাহিনীকেই করতে হবে। এ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের তেমন কিছু করার নেই।
আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠার বিষয়ে তালেবান এ মুহূর্তে একেবারেই আন্তরিক নয়। সামরিক আক্রমণের মাধ্যমে ২০ বছর পর দেশটির ক্ষমতায় ফের বসার দিকেই নজর তাদের।
সোমবার আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় সামানগান প্রদেশের রাজধানী আইবাক দখল করে তালেবান।
রোববার এক দিনেই কুন্দুজ প্রদেশের রাজধানী কুন্দুজ, সার-ই-পল প্রদেশের রাজধানী সার-ই-পল ও তাখার প্রদেশের রাজধানী তালোকান থেকে সরকারি বাহিনী হটাতে সক্ষম হয় তালেবান।
এর আগে শনিবার সকালে উত্তরাঞ্চলীয় তুর্কমেনিস্তান সীমান্তবর্তী জওজান প্রদেশের রাজধানী শেবেরঘান তালেবান নিয়ন্ত্রণে নেয়।
শুক্রবার রাতে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ইরানের সীমান্তবর্তী জারাঞ্জ দখলের মাধ্যমে প্রথম দেশটির কোনো প্রদেশের রাজধানী নিয়ন্ত্রণে নিতে সক্ষম হয় তালেবান।