করোনাভাইরাসের উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীকে টিকার বুস্টার শট হিসেবে তৃতীয় ডোজ দেয়ার পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্র।
দেশটির সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ড. অ্যান্থনি ফাউচি বৃহস্পতিবার জানান, দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল, এমন ব্যক্তিদের দ্রুততম সময়ে অতিরিক্ত ডোজ দিতে চায় প্রশাসন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, এর মাধ্যমে করোনা প্রতিরোধী টিকার বুস্টার শট দেয়ার তালিকায় জার্মানি, ফ্রান্স, ইসরায়েলের পর যুক্ত হতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
দেশে দেশে করোনা টিকা কার্যক্রম শুরুর প্রায় আট মাস চললেও দরিদ্র দেশগুলোর কোটি মানুষ এখনও প্রথম ডোজ পাননি। এমন পরিস্থিতিতে দুই ডোজের টিকার সঙ্গে ধনী দেশগুলোতে বুস্টার হিসেবে আরও এক ডোজ দেয়া স্থগিতের আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। স্পষ্টতই সে আহ্বান উপেক্ষিত।
বিশ্বজুড়ে রূপ পরিবর্তিত বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের করোনাভাইরাসের সংক্রমণের বাড়ছে। অধিক সংক্রামক একাধিক ভ্যারিয়েন্টের কারণে নতুন করে মহামারির বিস্তারও অব্যাহতভাবে বাড়ছে বিভিন্ন দেশে। এমন পরিস্থিতিতে করোনা টিকার তৃতীয় ডোজ প্রয়োগে আগ্রহী হচ্ছে দেশগুলো।
দেশে দেশে গণটিকাদান কার্যক্রম চললেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তা চলছে জরুরি অনুমোদনের ভিত্তিতে। কোনো টিকাই এখনও পূর্ণ অনুমোদন পায়নি। যুক্তরাষ্ট্রে অতিরিক্ত ডোজ দিতে দরকার হবে নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর পূর্ণ অনুমোদন।
এ অবস্থায় দেশটির রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি) জরুরি পরিস্থিতি বিবেচনায় তৃতীয় ডোজ সহজলভ্য করতে কাজ শুরু করে গত মাসেই।
আমেরিকানদের দুই ডোজ দেয়ার পরও তৃতীয় ডোজ দেয়ার মতো টিকা মজুত আছে বলে হোয়াইট হাউস বুধবার নিশ্চিত করেছে।
পরদিন সংবাদ সম্মেলনে ফাউচি বলেন, ‘কিছু ব্যক্তিকে বুস্টার শট দেয়া খুব জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি দুর্বল হওয়ায় করোনা টিকার দুই ডোজ তাদের জন্য পর্যাপ্ত নয়। আপাতত তাদের টিকা নিশ্চিতে কাজ চলছে।’
ফাউচি জানান, অধিক সংক্রামক ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের বিস্তার বাড়ছে বলে যুক্তরাষ্ট্রেও সব পর্যায়ে করোনা টিকার অতিরিক্ত ডোজ দেয়া শুরু হতে পারে।
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, পুরো যুক্তরাষ্ট্রে নতুন শনাক্ত ও হাসপাতালে ভর্তি করোনা রোগীর অর্ধেকই টিকা কার্যক্রমে সবচেয়ে পিছিয়ে থাকা সাতটি অঙ্গরাজ্যের বাসিন্দা। অঙ্গরাজ্যগুলো হলো ফ্লোরিডা, টেক্সাস, মিজৌরি, আরকানসাস, লুইজিয়ানা, অ্যালাবামা ও মিসিসিপি। এ সংখ্যার এক-তৃতীয়াংশের বেশি শুধু ফ্লোরিডা ও টেক্সাসে।
এক সপ্তাহের ব্যবধানে যুক্তরাষ্ট্রে করোনা শনাক্তের হার বেড়েছে প্রায় ৪৩ শতাংশ; মৃত্যু বেড়েছে ৩৯ শতাংশের বেশি। ছয় মাসের মধ্যে বুধবার রেকর্ড এক লাখের বেশি শনাক্ত হয় দেশটিতে।