যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে চীনে পরমাণু শক্তিনির্ভর কারখানার একটি রিঅ্যাক্টর বা পারমাণবিক চুল্লি।
অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে নির্মিত বিশ্বের প্রথম পারমাণবিক চুল্লি এটি।
কারখানা থেকে অতিরিক্ত তেজস্ক্রিয়তা নির্গত হতে থাকায় গত মাসে ধরা পড়ে ত্রুটিটি।
গুয়াংদং প্রদেশে অবস্থিত তাইশান পরমাণু ক্ষেত্রের ইউনিট-১ বন্ধ করে দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে কারখানা কর্তৃপক্ষ।
বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়, চুল্লিতে জ্বালানি সরবরাহের জন্য ব্যবহৃত পাইপলাইনে ত্রুটি নিয়ে প্রকৌশলীদের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনার পর এটি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
চীনের আদলে ‘এক্সটেন্ডেড প্রডিউসার রেসপনসিবিলিটি’ বা সংক্ষেপে ইপিআরধর্মী চুল্লি তৈরির কাজ চলছে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, ফিনল্যান্ডসহ বেশ কিছু দেশে।
এক মাস আগেই চুল্লিতে এ সমস্যার বিষয়টি নিশ্চিত করেছিল চীনা সরকার। তবে সে সময় ‘সামান্য ত্রুটি’ দাবি করে এটি নিয়ে উদ্বেগের কারণ নেই বলে জানিয়েছিল বেইজিং।
চীনের জেনারেল নিউক্লিয়ার পাওয়ার গ্রুপ (সিজিএন) শুক্রবার এক বিবৃতিতে ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে’ বলে জানায়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ত্রুটির কারণ অনুসন্ধানে কাজ চলছে। একই সঙ্গে প্রকৌশলীরা জ্বালানি সরবরাহের পাইপলাইনও নতুন করে স্থাপন করবেন।
চলতি বছরের জুনে তাইশানের পাইপলাইনে ছিদ্র আছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে যুক্তরাষ্ট্র সরকার কাজ করছে বলে জানিয়েছিল সিএনএন।
তাইশান পরমাণু ক্ষেত্র পরিচালনায় সহযোগিতা করে ফরাসি জ্বালানি সংস্থা ইডিএফ। সংস্থাটি সে সময় যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করে জানিয়েছিল, চুল্লি বন্ধের পরিস্থিতি এড়াতে কারখানা থেকে তেজস্ক্রিয়তা নিঃসরণ অনুমোদিত মাত্রার চেয়েও বাড়িয়ে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
‘ফুয়েল রড’ নামে পরিচিত জ্বালানি সরবরাহের পাইপলাইনগুলো ধাতব টিউব দিয়ে আটকানো থাকে। পারমাণবিক চুল্লি পরিচালনার জন্য ব্যবহৃত পারমাণবিক উপাদান ধারণ করে এসব ফুয়েল রড।
আশপাশের পরিবেশের অতিরিক্ত তেজস্ক্রিয়তার কারণে কারখানা বন্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে গত সপ্তাহে জানিয়েছিলেন ইডিএফের এক মুখপাত্র। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত চীনের কারখানা কর্তৃপক্ষই নেবে বলেও জানান তিনি।
ইডিএফের মতে, তাইশানের ‘বর্তমান পরিস্থিতি গুরুতর নয়’। কিন্তু ‘ভবিষ্যৎ গুরুতর পরিস্থিতি’র শঙ্কা তৈরি হয়েছে।