শক্তির মাধ্যমে নয়, আফগানিস্তানে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে আলোচনার শান্তিপূর্ণ পথেই এগোতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। দুই দিনের দিল্লি সফরে এসে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠকের পর এ কথা বলেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন।
বৈঠক শেষে জয়শঙ্করের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘তালেবান বহুদিন ধরেই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি চাইছে। চাইছে তাদের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হোক, তাদের নেতারা যেন দুনিয়ায় অবাধে ঘুরে বেড়াতে পারেন।
‘কিন্তু আফগানিস্তানে জোর করে ক্ষমতা দখল করতে গেলে বা নিজেদের লোকদের ওপর অত্যাচার করে সে লক্ষ্য পূরণ হবে না।’
ব্লিংকেন বলেন, ‘এটা ঠিক যে গত সপ্তাহে আমরা বেশ কয়েকটি জেলা সদরে তালেবানের অগ্রযাত্রা দেখেছি। প্রাদেশিক কয়েকটি রাজধানীও তারা কবজা করতে চাইছে। যে সব এলাকা তারা দখল করেছে, সেখানে নির্যাতন চালানোরও খবর আসছে, যেগুলো সত্যিই বিচলিত করার মতো।’
তিনি বলেন, ‘আফগানিস্তানে আবার সন্ত্রাসবাদ যাতে শক্তিশালী হতে না পারে, সেটি নিশ্চিত করতে কাজ করে যাবে আমেরিকা। আফগান সরকার ও তালেবানদের সঙ্গে আলাপ আলোচনার মধ্যে দিয়ে শান্তিপূর্ণ পথেই সমাধান খুঁজতে হবে আমাদের। আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগে ভারতের ভূমিকাও খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই শীর্ষ বৈঠকে আফগানিস্তান ছাড়াও করোনা মহামারি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেন, করোনা সংক্রমণের প্রথম পর্বে ভারত যুক্তরাষ্ট্রের পাশে দাঁড়িয়েছিল। ওই সময় অনেক সাহায্য পেয়েছি আমরা ভারতের কাছ থেকে। প্রতিদানে আমরা সংক্রমণের দ্বিতীয় পর্বে ভারতকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছি। করোনার বিরুদ্ধে আগামী দিনেও ভারত-আমেরিকা ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই করবে।
বুধবার সকালে ব্লিংকেন তার প্রথম কর্মসূচি হিসেবে সিভিল সোসাইটির বিশিষ্ট মানুষদের সঙ্গে এক আলোচনা সভায় অংশ নেন।
সেখানে তিনি বলেন, ‘গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করার জন্য বিশ্বের বৃহত্তম দুটি গণতন্ত্রের আরও বেশি কাজ করা উচিত। মূল্যবোধের আদানপ্রদান, স্বাধীনতা এবং সাম্য, যা সমাজ গড়ার মূল উপাদান, সেটি আরও মজবুত করতে আমাদের মধ্যে কেউই যথেষ্ট কাজ করতে পারেনি। আমাদের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও শক্তিশালী করা দরকার। এটি কৌশলগত এবং অর্থনৈতিক সম্পর্কের বাইরে আমাদের সম্পর্কের মূল বিষয়।’
এদিন বিকালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গেও দেখা করেন ব্লিংকেন। আগে ভারতে এলেও বাইডেন প্রশাসনের শাসনকাল শুরু হওয়ার পর তৃতীয়বার এবং যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রী হিসেবে এটিই প্রথম ভারত সফর ব্লিংকেনের। সন্ধ্যায় তিনি দিল্লি থেকে কুয়েতের উদ্দেশে রওয়ানা হন।