ভূমধ্যসাগরের লিবিয়া উপকূলে একটি নৌকা ডুবে প্রাণ গেছে ২০ নারী, ২ শিশুসহ কমপক্ষে ৫৭ অভিবাসনপ্রত্যাশীর।
জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএম সোমবার জানায়, পশ্চিম উপকূলের বন্দরনগরী খুমস থেকে রোববার ইউরোপের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছিল নৌকাটি। সে সময় নৌকায় ৭৫ আরোহী ছিলেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে আইওএমের মুখপাত্র সাফা মেসেহলি জানান, এ ঘটনায় আফ্রিকান ১৮ অভিবাসনপ্রত্যাশীকে জীবিত উদ্ধার করে তীরে ফিরিয়ে নেয়া হয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়, উদ্ধার ব্যক্তিরা নাইজেরিয়া, ঘানা ও গাম্বিয়ার নাগরিক। স্থানীয় জেলে ও কোস্টগার্ড সদস্যরা তাদের উদ্ধার করে।
নৌকা ডুবে যাওয়ার কারণ হিসেবে বলা হয়, ইঞ্জিন নষ্ট হয়ে মাঝদরিয়ায় ভাসছিল নৌকাটি। এরপর দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় ডুবে যায় সেটি।
দারিদ্র্য ও সংঘাত থেকে বাঁচার পাশাপাশি উন্নত জীবনের আশায় আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের লাখো মানুষ কয়েক বছর ধরেই অবৈধ ও বিপজ্জনক পথে ভূমধ্যসাগর হয়ে ইউরোপে যাওয়ার চেষ্টা করছে। ২০২০ সাল পর্যন্ত কয়েক বছর এ সংখ্যা কম থাকলেও চলতি বছর ইউরোপের অন্যতম প্রবেশপথ ইতালিতে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ভিড় বেড়েছে।
বিশেষ করে আবহাওয়া স্থিতিশীল থাকায় সম্প্রতি তিউনিসিয়া ও লিবিয়া থেকে সমুদ্রপথে ইতালিগামী অবৈধ অভিবাসনপ্রত্যাশীর সংখ্যা বাড়ছে। গত কয়েক মাসে সমুদ্রের ওই অঞ্চলটিতে বেশ কয়েকটি নৌকাডুবি হয়েছে।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের তথ্য অনুযায়ী, এ বছরের প্রথম ছয় মাসে সাত হাজারের বেশি মানুষকে সমুদ্র থেকে উদ্ধার করে লিবিয়ার বিভিন্ন শরণার্থী কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।
আইওএমের চলতি মাসে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, এ বছর প্রথম ছয় মাসে ২০২০ সালের প্রথম ছয় মাসের তুলনায় ইউরোপগামী অভিবাসনপ্রত্যাশী ও শরণার্থীর সংখ্যা দ্বিগুণের বেশি।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত ভূমধ্যসাগরে প্রাণ গেছে কমপক্ষে ১ হাজার ১৪৬ জনের। তাদের মধ্যে শুধু লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয়েছে ৭৪১ জনের।
সবচেয়ে প্রাণঘাতী নৌকাডুবির ঘটনাটি ঘটে গত ২২ এপ্রিল, যাতে প্রাণ যায় ১৩০ জনের।