দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ইকুয়েডরের দুটি কারাগারে দাঙ্গায় প্রাণ গেছে কমপক্ষে ২৭ বন্দির। এ ঘটনায় জরুরি অবস্থা জারি করেছে দেশটির সরকার।
ইকুয়েডরের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় গুয়াইয়াস ও মধ্যাঞ্চলীয় কোটোপাজির দুটি জেলে গত বুধবার শুরু হয় এ দাঙ্গা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি ‘আইনের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনীয় জনবল ও অর্থ সহায়তা কাজে লাগানোর’ নির্দেশ জারি করেন প্রেসিডেন্ট জুইলারমো লাসো।
ইকুয়েডরের কারা ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ এসএনএআইয়ের বরাত দিয়ে আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়, কোটোপাজিতে ১৯ কয়েদি মারা গেছে। এদের মধ্যে একজনকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছে। আর গুয়াইয়াস কারাগারে প্রাণ গেছে আট কয়েদির।
প্রাথমিকভাবে দাঙ্গায় ২২ জন নিহতের খবর জানিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। বলা হয়েছিল আট পুলিশ কর্মকর্তাসহ ৫৭ আহত। পুলিশ কর্মকর্তাদের একজনকে ধর্ষণ করা হয়েছে।
স্থানীয় সময় শুক্রবার কোটোপাজির গভর্নর অসওয়াল্ডো করোনেল এক সংবাদ সম্মেলনে বৃহস্পতিবার রাতে অজ্ঞাতসংখ্যক মরদেহ উদ্ধারের কথা জানান।
কোটোপাজি কারাগার থেকে পালানো ৮৬ কয়েদিতে পুনরায় গ্রেপ্তারের খবর নিশ্চিত করেছে এসএনএআই। কতজন পালিয়েছে, তা জানানো হয়নি।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতেও কারাগার দুটিতে সহিংস দাঙ্গা হয়। দেশের বড় কারাগারগুলোর নিয়ন্ত্রণ নেয়ার লড়াইয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী কয়েকটি অপরাধী চক্রের মধ্যে সহিংসতার জেরে দাঙ্গার শুরু। ওই দাঙ্গায় এক দিনেই প্রাণ হারায় ৭৯ কয়েদি।
ইকুয়েডরে প্রায় ৬০টি কারাগার ২৯ হাজার কয়েদির ধারণক্ষমতাসম্পন্ন। কিন্তু ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত কয়েদিতে ভর্তি সব কারাগার। সে তুলনায় রয়েছে লোকবলে ঘাটতি।
করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে ছোঁয়াচে ভাইরাসের সংস্পর্শ এড়াতে কারাগারে বন্দিসংখ্যা সীমিত রাখতে নতুন কৌশল নেয় সরকার। লঘু অপরাধের জন্য বিকল্প সাজার ব্যবস্থা করা হয় সে সময়। এতে কারাগারে অতিরিক্ত কয়েদির হার ৪২ শতাংশ থেকে ৩০ শতাংশে নেমে আসে।
২০২০ সালে ইকুয়েডরের বিভিন্ন কারাগারে দাঙ্গায় ১০৩ জন নিহত হয় বলে জানিয়েছে দেশটির মানবাধিকার কমিশন।