ভারতে ভয়াবহ ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে’ এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৩০০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মানডাভিয়া বুধবার এ তথ্য জানান বলে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, গত কয়েক মাসে ভারতে ৪৫ হাজার ৩৭৪ জনের দেহে বিরল ও ভয়াবহ মিউকোরমাইকোসিস বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণ দেখা গেছে।
ব্ল্যাক ফাঙ্গাস নাক, চোখ এবং কখনো কখনো মস্তিষ্কে সংক্রমণ ঘটায়। করোনা রোগমুক্তির ১২ থেকে ১৮ দিনের মধ্যে সাধারণত এটি শরীরে হানা দেয়।
চিকিৎসকদের ভাষ্য, করোনা চিকিৎসায় ব্যবহৃত স্টেরয়েডের সঙ্গে ফাঙ্গাসটির যোগসূত্র রয়েছে। ডায়াবেটিসের উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা রোগীদেরও এই ফাঙ্গাস আক্রান্ত করে।
করোনায় আক্রান্ত রোগীদের ফুসফুসের সংক্রমণ কমাতে ভূমিকা রাখে স্টেরয়েড। পাশাপাশি করোনা রোগীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যাওয়ায় সম্ভাব্য ক্ষতি বন্ধেও কাজ করে স্টেরয়েড।
তবে স্টেরয়েড একই সঙ্গে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমিয়ে দেয়। এ ছাড়া ডায়াবেটিস রোগী ও যাদের ডায়াবেটিস নেই উভয়েরই ব্লাড সুগার বাড়িয়ে দেয় স্টেরয়েড।
চিকিৎসকদের ধারণা, ডায়াবেটিস, ক্যানসার, এইডস রোগীসহ দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের মিউকরমাইকোসিসে আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা বেশি।
চিকিৎসকরা জানান, ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় কেবল একটি অ্যান্টি-ফাঙ্গাল ইনজেকশনই কার্যকর।
ভারতে মহারাষ্ট্র ও গুজরাট রাজ্যে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস সবচেয়ে বেশি আঘাত হেনেছে। ওই রাজ্য দুটিতে এ রোগে ১ হাজার ৭৮৫ জনের মৃত্যু হয়।
ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় কর্ণাটক রাজ্যের বেঙ্গালুরু শহরের চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. রঘুরাজ হেগদে বিবিসিকে বলেন, ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে শনাক্ত ও মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা সরকারি হিসাবের চেয়ে অনেক বেশি।’
তিনি বলেন, ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হওয়ার পর সাধারণত কয়েক সপ্তাহ থেকে মাসখানেকের মতো সময় লেগে যায় মৃত্যু ঘটতে।
‘আমাদের বিদ্যমান ব্যবস্থা ওইসব মৃত্যু ডেটাভুক্ত করার মতো উপযুক্ত নয়।’
চক্ষু বিশেষজ্ঞ হেগদে আরও বলেন, ছোট হাসপাতাল ও গ্রামাঞ্চলে রোগ শনাক্ত কঠিন হওয়ায় আক্রান্তদের সংখ্যা ডেটায় যোগ করা হয় না। খুব কম রোগীই বড় শহরে চিকিৎসা করাতে আসে।