সামরিক জোট ন্যাটোর মিত্র যুক্তরাষ্ট্র লজিস্টিক, আর্থিকসহ অন্যান্য সহায়তা দিলে কাবুল বিমানবন্দর পরিচালনার দায়িত্ব নিতে রাজি তুরস্ক।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান মঙ্গলবার এ কথা জানান বলে বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ও পরিচালনা নিয়ে তুরস্কের প্রস্তাবের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা চলছে এরদোয়ান সরকারের।
তুরস্কের পক্ষ থেকে সম্প্রতি বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রসহ ন্যাটোভুক্ত দেশের সেনা আফগানিস্তান ছাড়ার পর কাবুলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক অব্যাহত রাখতে ওই বিমানবন্দর চালু রাখা দরকার।
জুনে ন্যাটো সম্মেলনে এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে সামনাসামনি কথা বলেন এরদোয়ান।
এরদোয়ান মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সেনা আফগানিস্তান ছাড়ার পর কাবুল বিমানবন্দর পরিচালনার বিষয়ে আমরা এ মুহূর্তে ইতিবাচক।
‘তবে যুক্তরাষ্ট্রকে কিছু শর্ত পূরণ করা লাগবে।’
কী ধরনের শর্ত জানতে চাইলে এরদোয়ান বলেন, ‘প্রথমে কূটনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রকে আমাদের পাশে থাকতে হবে।
‘কাবুল বিমানবন্দর নিরাপত্তায় দেশটিকে লজিস্টিক সহায়তা দেয়া লাগবে। পাশাপাশি আর্থিক ও প্রশাসনিকসংক্রান্ত গুরুতর সংকট মেটাতে প্রয়োজনীয় সহায়তা তুরস্ককে যুক্তরাষ্ট্রের দিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘এসব শর্ত মানতে যুক্তরাষ্ট্র রাজি হলে তুরস্ক কাবুল বিমানবন্দর পরিচালনার প্রক্রিয়া শুরু করবে।’
এরদোয়ান আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তালেবানের এরই মধ্যে আলোচনা হয়েছে। তুরস্কের সঙ্গে এসব বিষয়ে সংগঠনটির আরও খোলামেলাভাবে আলোচনা করা উচিত।
‘আমি মনে করি, তালেবানের সঙ্গে আমরা চুক্তিতে পৌঁছতে পারব।’
অবশ্য গত সপ্তাহে আফগানিস্তান থেকে বিদেশি সেনা সেপ্টেম্বরে চলে যাওয়ার পর কাবুল বিমানবন্দর পাহারায় নিজেদের সেনা রেখে যাওয়ায় তুরস্কের পরিকল্পনায় ক্ষুব্ধ হয় তালেবান।
তুরস্কের এ পরিকল্পনার বিষয়ে তালেবান এক বিবৃতিতে বলেছিল, ‘ইসলামিক আমিরাত অফ আফগানিস্তান তুরস্কের এ সিদ্ধান্তের নিন্দা জানাচ্ছে।
‘তুরস্কের কর্মকর্তারা তাদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনায় ব্যর্থ হলে এবং আমাদের দেশ দখলের প্রক্রিয়া জারি রাখলে ইসলামিক আমিরাত তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে।’
তালেবান আরও জানায়, ‘এ ক্ষেত্রে পরিণতির দায় তাদের নিতে হবে, যারা আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে।’
১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত কঠোর হাতে আফগানিস্তান শাসন করে তালেবান।
যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ারে সন্ত্রাসী হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ন্যাটোভুক্ত দেশগুলো ২০০১ সালে তালেবানকে দক্ষিণ এশিয়ার দেশটির ক্ষমতা থেকে সরায়।
এরপর থেকে গত ২০ বছর ধরে পশ্চিমা দেশ-সমর্থিত আফগানিস্তান সরকারকে পতনের মাধ্যমে দেশটিতে ইসলামি শাসন প্রতিষ্ঠার লড়াই করছে তালেবান।
সেপ্টেম্বরের মধ্যে পুরোপুরি প্রত্যাহারের লক্ষ্য নিয়ে মাসখানেক ধরে বিদেশি সেনা আফগানিস্তান ছাড়তে শুরু করেছে।