বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মহামারির তৃতীয় ধাক্কা শুরু: ডব্লিউএইচও

  •    
  • ১৫ জুলাই, ২০২১ ১৫:৪৭

করোনাভাইরাসের রূপ পরিবর্তিত ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট এ পর্যন্ত ১১১টি দেশ ও অঞ্চলে শনাক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে ডব্লিউএইচও। আগামী কয়েক মাসে এটাই বৈশ্বিক মহামারির প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়াবে বলেও সতর্ক করেছে সংস্থাটি।

করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে আবারও পিছিয়ে পড়ছে বিশ্ব। দেশে দেশে বাড়তে শুরু করেছে সংক্রমণ ও মৃত্যু। ক্ষীণ হয়ে আসছে করোনাপূর্ব স্বাভাবিক জীবনে ফেরার আশা, শঙ্কা বাড়ছে নতুন করে বিধিনিষেধ আরোপের।

টানা ৯ সপ্তাহ বিশ্বজুড়ে করোনায় দৈনিক মৃত্যু নিম্নমুখী থাকার পর গত সপ্তাহ থেকে এ সংখ্যা বাড়তে শুরু করে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। গত সপ্তাহে ৫৫ হাজার মানুষের মৃত্যু রেকর্ড হয়েছে যা আগের সপ্তাহের তুলনায় তিন শতাংশ বেশি।

এক সপ্তাহের ব্যবধানে গত সপ্তাহে করোনার বৈশ্বিক সংক্রমণও ছিল ১০ শতাংশ বেশি। নতুন করে প্রায় ৩০ লাখ মানুষের দেহে সে সময় ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি শনাক্ত হয়েছে ব্রাজিল, ভারত, ইন্দোনেশিয়া আর যুক্তরাজ্যে।

বার্তা সংস্থা এপির প্রতিবেদনে জানানো হয়, মহামারির এ পর্যায়ে করোনা সংক্রমণ বাড়তে শুরু করার অন্যতম কারণ টিকা কার্যক্রমের ধীর গতি, মাস্ক পরা ও অন্যান্য পূর্ব সতর্কতামূলক বিধিনিষেধ শিথিল হয়ে যাওয়া এবং এ সুযোগে অধিক সংক্রামক ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের দ্রুত বিস্তার।

করোনাভাইরাসের রূপ পরিবর্তিত ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট এ পর্যন্ত ১১১টি দেশ ও অঞ্চলে শনাক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে ডব্লিউএইচও। আগামী কয়েক মাসে এটাই বৈশ্বিক মহামারির প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়াবে বলেও সতর্ক করেছে সংস্থাটি।

ডব্লিউএইচওর প্রধান তেদ্রোস আধানম বলেন, 'দুর্ভাগ্যজনকভাবে... তৃতীয় ধাক্কার শুরুটা কেবল দেখছি আমরা।'

মহামারির বিস্তার বাড়তে থাকার মধ্যেই ১১তম দেশ হিসেবে লাতিন আমেরিকার আর্জেন্টিনায় বুধবার করোনায় মৃত্যু এক লাখ ছাড়িয়েছে। চলতি সপ্তাহে করোনায় রেকর্ড মৃত্যু দেখেছে রাশিয়া। বেলজিয়ামে তরুণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে বাড়ছে ডেল্টার সংক্রমণ; এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে এ সংখ্যা। যুক্তরাজ্যে ছয় মাসে প্রথমবার এক দিনে ৪০ হাজারের বেশি মানুষের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে মিয়ানমারে দিন-রাত চলছে মরদেহ সমাধিস্থ করার কাজ। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় এক হাজার মৃত্যু দেখেছে ইন্দোনেশিয়া; দিনে নতুন শনাক্ত ৫৪ হাজারের বেশি, যা এক মাস আগেও ছিল আট হাজারের নিচে।

বিশ্বে সবচেয়ে দ্রুতগতিতে করোনা প্রতিরোধে গণটিকাদান চলছে যুক্তরাষ্ট্রে। কিন্তু সেখানেও গত দুই সপ্তাহে শনাক্তের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে গড় ২৪ হাজার ছাড়িয়েছে। যদিও দৈনিক মৃত্যু এখনও নিম্নমুখী।

যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ শহর লস অ্যাঞ্জেলেসে মঙ্গলবার টানা পঞ্চম দিনের মতো দৈনিক শনাক্ত এক হাজারের বেশি ছিল। শিকাগোতে বাইরে থেকে শহরে আসা মানুষজনকে টিকা না নেয়া থাকলে হয় কোভিড নেগেটিভ টেস্ট দেখাতে হবে, না হলে কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে।

কানেক্টিকাটে জরুরি ব্যবস্থার সময় বাড়াতে পার্লামেন্টে ভোট হয়েছে। মাস্ক না পরলে টিকা থাকার প্রমাণ সঙ্গে রাখতে হবে বলে নির্দেশ দেয়া হয়েছে অ্যালাবামার সামরিক ঘাঁটি থেকে।

এশিয়ায় করোনার বিস্তার ঊর্ধ্বমুখী বলে চতুর্থবারের মতো চলতি মাসে জরুরি অবস্থা জারি করেছে জাপান। দেশটিতে দ্রুত হাসপাতাল ভরে যাচ্ছে রোগীতে। সর্বোচ্চ সংক্রমণ শনাক্তের পর দক্ষিণ কোরিয়ায় রাজধানী সিউলে এযাবৎকালের কঠোরতম সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

অস্ট্রেলিয়ায় ৫০ লাখ বাসিন্দার সিডনিতে জারি করা হয়েছে কঠোর লকডাউন, যা চলবে কমপক্ষে চলতি মাসের শেষ পর্যন্ত।

ইউরোপের মধ্যে স্পেনের বার্সেলোনায় রাত্রিকালীন কারফিউ জারি করা হয়েছে। লন্ডনে বাস ও ট্রেনে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হবে বলে জানিয়েছেন মেয়র সাদিক খান। বিদেশগামী সকলকে দেশে ফিরতে হলে কোয়ারেন্টিনের শর্ত পূরণ করতে হতে পারে বলে সতর্ক করে ইতালি।

বিশ্বজুড়ে করোনা প্রতিরোধী গণটিকাদান কার্যক্রম চলছে সাত মাস ধরে।

জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির তথ্য অনুযায়ী, দিনে বৈশ্বিক মৃত্যু কমেছে প্রায় আট হাজার করে, জানুয়ারিতে যা ছিল ১৮ হাজারের বেশি। দৈনিক সংক্রমণ এখন সাড়ে চার লাখের নিচে, যা এপ্রিলের তুলনায় প্রায় অর্ধেক।

এমন সময়ে অনেক দেশের ওপর স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ফেরার চাপ বাড়ছে।

কিন্তু পূর্ব সতর্কতামূলক সব বিধিনিষেধ শিথিলে ভাইরাস বিস্তারের সুযোগ আরও বাড়বে এবং মহামারি দীর্ঘায়িত হবে বলে সতর্ক করেছে ডব্লিউএইচও।

এ অবস্থায় সংক্রমণের গতি রোধে টিকা কার্যক্রমের গতি বাড়াতে বিভিন্ন দেশের ওপর চাপ বাড়ছে।

করোনার সংক্রমণে শীর্ষ দুই দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে মোট জনগোষ্ঠীর ৫৫ শতাংশ, প্রায় ১৬ কোটি আমেরিকান দুই ডোজ টিকা গ্রহণ সম্পন্ন করেছেন।

ভারতে এ হার মাত্র সাড়ে পাঁচ শতাংশ।

এ বিভাগের আরো খবর