নির্ধারিত সময়সীমার পর বিদেশি সেনারা আফগানিস্তানে রয়ে গেলে দখলদার হিসেবে ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে বলে সতর্ক করেছেন তালেবানের মুখপাত্র সুহেইল শাহীন।
কাতারে তালেবানের কার্যালয় থেকে রোববার তিনি এ সতর্কবার্তা দেন বলে বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
চলতি বছরের এপ্রিলে আফগানিস্তান থেকে নিজেদের সব সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
১১ সেপ্টেম্বর টুইন টাওয়ারে হামলার ২০ বছর পূর্তির আগেই সেনা সরানোর বাইডেনের ঘোষণার পর ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোও ওই সময়ের মধ্যে তাদের সেনা প্রত্যাহারের কথা জানায়।
তবে কূটনৈতিক মিশন ও কাবুলের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নিরাপত্তায় মূলত যুক্তরাষ্ট্রের এক হাজার সেনা আফগানিস্তানে রয়ে যেতে পারে বলে সম্প্রতি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদনে প্রকাশ হয়।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে তালেবানের মুখপাত্র শাহীন ওই হুঁশিয়ারি দেন।
বিবিসিকে শাহীন বলেন, ‘আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল সামরিকভাবে দখল করা তালেবানের নীতি নয়।
‘তবে সামরিক ঠিকাদারসহ কোনো বিদেশি সেনা প্রত্যাহার প্রক্রিয়ার শেষে দেশে থাকতে পারবে না।’
তিনি বলেন, ‘দোহা চুক্তি ভঙ্গ করে বিদেশিরা আফগানিস্তানে তাদের সেনা রেখে গেলে সে ক্ষেত্রে পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, তা আমাদের নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নেবে।’
তালেবান মুখপাত্র জোর দিয়ে জানান, কূটনীতিক, এনজিওকর্মীসহ অন্যান্য বিদেশি নাগরিক তালেবানের লক্ষ্য হবে না। তাদের নিরাপত্তায় কোনো বাহিনীরও প্রয়োজন নেই।
তিনি বলেন, ‘আমরা দেশে বিদেশি সেনার অবস্থানের বিরুদ্ধে; কূটনীতিক বা এনজিওকর্মীর নয়। এনজিও ও দূতাবাসের কার্যক্রম আমাদের জনগণের দরকার। আমরা তাদের হুমকির কারণ হব না।’
কাতারের রাজধানী দোহায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আফগানিস্তানের শান্তি আলোচনায় তালেবানের প্রতিনিধি দল। ছবি: এএফপি
কাবুলের কাছে বাগরাম বিমানঘাঁটি থেকে শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রসহ ন্যাটোভুক্ত সব দেশের সেনা প্রত্যাহারের ঘটনাকে ‘ঐতিহাসিক’ হিসেবে মন্তব্য করেন তালেবান মুখপাত্র শাহীন।
বাগরাম দীর্ঘ দুই দশক আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম সামরিক ঘাঁটি ছিল।
গত বছর যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটোভুক্ত দেশ ও তালেবান দোহা চুক্তি সই করে।
এতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রসহ ন্যাটোভুক্ত দেশগুলো আফগানিস্তান থেকে তাদের সব সেনা সরিয়ে নেবে।
বিনিময়ে আল-কায়েদা বা এ ধরনের চরমপন্থি সশস্ত্র কোনো সংগঠনকে আফগানিস্তানে নিজেদের নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে কাজ করতে দেবে না তালেবান।