যুক্তরাজ্য সরকারের প্রতিরক্ষাসংক্রান্ত গোপন নথি ইংল্যান্ডের একটি বাসস্টপে পাওয়া গেছে। নথিগুলোতে যুক্তরাজ্যের একটি যুদ্ধজাহাজের চলাচলের রূপরেখার পাশাপাশি আফগানিস্তানে ব্রিটিশ সামরিক বাহিনীর উপস্থিতি নিয়ে পরিকল্পনাও উল্লেখ ছিল।
সম্প্রতি ক্রিমিয়া উপকূলে যুক্তরাজ্যের ওই যুদ্ধজাহাজের চলাচলের পথে রাশিয়া সতর্কতামূলক গুলি ও বোমা ছুড়লে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়।
রাষ্ট্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নথি বাসস্টপে কীভাবে গেল, তা নিয়ে তদন্ত চলছে বলে রোববার যুক্তরাজ্য সরকার জানিয়েছে।
দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাতে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, গত সপ্তাহে মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা ওই নথিগুলো হারিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন।
রোববার যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজকে নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডবিষয়ক মন্ত্রী ব্র্যান্ডন লুইস বলেন, ‘এমনটি হওয়ার কথা নয়। এ নিয়ে অভ্যন্তরীণ তদন্ত চলছে।’
নাম না জানা কয়েকজন ব্যক্তি বিবিসিকে বলেন, মঙ্গলবার ইংল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলে কেন্ট কাউন্টির এক বাসস্টপের পেছনে ৫০ পৃষ্ঠার অপ্রকাশিত নথি কুড়িয়ে পান তারা।
ক্রিমিয়া উপকূল দিয়ে যুক্তরাজ্যের যুদ্ধজাহাজ এইচএমএস ডিফেন্ডার চললে রাশিয়ার প্রতিক্রিয়া কী হতে পারে, ব্রিটিশ কর্মকর্তারা তা জানতেন বলে কুড়িয়ে পাওয়া নথিতে উল্লেখ ছিল। রাশিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়, বুধবার ক্রিমিয়া উপকূলের কাছে যুক্তরাজ্যের যুদ্ধজাহাজটি রাশিয়ার সমুদ্রসীমায় চলে আসে। এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করায় ওই যুদ্ধজাহাজের পথে সতর্কতামূলক গুলি ও বোমা ছোড়া হয়।
রাশিয়া সরকারের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ নিজেদের সমুদ্রসীমায় যুক্তরাজ্যের যুদ্ধজাহাজ চলাচলকে ‘ইচ্ছাকৃত ও পরিকল্পিত উসকানি’ হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন।
অবশ্য যুক্তরাজ্যের দাবি, আন্তর্জাতিক আইন মেনে ইউক্রেনের জলসীমা দিয়ে যাচ্ছিল তাদের যুদ্ধজাহাজ।
ইউরোপের পূর্বে কৃষ্ণ সাগরের উত্তরাঞ্চলীয় উপকূলে ক্রিমিয়া উপদ্বীপ অবস্থিত।
২০১৪ সালে পূর্ব ইউরোপীয় দেশ ইউক্রেনের কাছ থেকে ক্রিমিয়া দখল করে রাশিয়া। দেশটির এ পদক্ষেপ এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বড় একটি অংশ স্বীকৃতি পায়নি।
ন্যাটোভুক্ত দেশগুলো চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের ১১ তারিখের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে তাদের সেনা প্রত্যাহারের পর দেশটিতে সম্ভাব্য ব্রিটিশ সামরিক বাহিনীর উপস্থিতি নিয়ে পরিকল্পনাও হারিয়ে যাওয়া নথিতে ছিল।