বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মিয়ানমার জেলে আমাকে নির্যাতন করা হয়: যুক্তরাষ্ট্রের সাংবাদিক

  •    
  • ২৭ জুন, ২০২১ ১৮:৩০

মং বলেন, ‘আমার হাত পেছনে নিয়ে তাতে হাতকড়া পরানো হয়। চোখ কাপড় দিয়ে বাঁধা হয়। টানা তিন থেকে চার দিন আমাকে ঘুমাতে দেয়া হয়নি। ওই সময় বিরামহীন জিজ্ঞাসাবাদ চলে।’

মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ তুলেছেন দেশটির কারাগার থেকে সদ্য মুক্ত হওয়া যুক্তরাষ্ট্রের সাংবাদিক নাথান মং।

তিন মাসের বেশি সময় মিয়ানমারে কারাবন্দি ছিলেন মং। ওই সময়ের অভিজ্ঞতা যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্য থেকে শুক্রবার টেলিফোনে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান তিনি। রোববার সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে মংয়ের অভিজ্ঞতা তুলে ধরা হয়।

চলতি বছরের ৯ মার্চ অনলাইন সংবাদমাধ্যম কামায়ুত মিডিয়ার সম্পাদক ৪৪ বছর বয়সী মংকে আটক করে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকারের নিরপত্তা বাহিনী। ১৫ জুনের দিকে তাকে ছেড়ে দেয়া হলে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসেন তিনি।

মং জানান, তার সহকর্মী হানথার নিইন এখনও মিয়ানমারের কারাগারেই রয়েছেন। তাকে তার চেয়ে বেশি নির্যাতন করা হয়েছে।

সম্পাদক মংয়ের নির্যাতনের অভিযোগের বিষয়ে মিয়ানমারের জান্তা সরকারের মুখপাত্রকে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

জান্তা সরকারের মুখপাত্রের ভাষ্য, আটককৃতদের সঙ্গে দেশের আইন অনুযায়ী আচরণ করা হচ্ছে।

মং বলেন, ‘প্রথম তিন থেকে চার দিনের অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। আমাকে বেশ কয়েকবার ঘুষি ও চড় মারা হয়। যা-ই বলি না কেন, জবাবে তারা আমাকে শুধু মারছিল।

‘অনেকবার আমার কানের পর্দায় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা দুই হাত দিয়ে মারে। দাঁড়ানোর অনুমতি ছিল না আমার। আমার পা ফুলে গিয়েছিল। নড়াচড়া করতে পারছিলাম না।’

মিয়ানমারে জন্ম হওয়া মং নব্বইয়ের দশকে শরণার্থী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে যান।

তিনি জানান, মিয়ানমারে কামায়ুত মিডিয়া অফিস থেকে তাকে আটক করা হয়। কামায়ুতে তার প্রকাশনা, সেখানে তার ভূমিকা এবং কীভাবে সংবাদমাধ্যমটি পরিচালনা করা হয়, এসব নিয়ে আটকাবস্থায় প্রশ্ন করা হয়।

মং বলেন, ‘আমার হাত পেছনে নিয়ে তাতে হাতকড়া পরানো হয়। চোখ কাপড় দিয়ে বাঁধা হয়।

‘টানা তিন থেকে চার দিন আমাকে ঘুমাতে দেয়া হয়নি। ওই সময় বিরামহীন জিজ্ঞাসাবাদ চলে।’

মং জানান, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক- মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী এ তথ্য জানার পর চার দিনের মাথায় তাকে পেটানো বন্ধ হয়।

তিনি বলেন, ‘আটকের অষ্টম দিনে একজন কর্নেল এসে আমার চোখের কাপড় সরিয়ে নেন।’

মং জানান, ওই কর্নেল তার সাক্ষ্য রেকর্ড করেন। তার কিছু বলার আছে কি না, জানতে চাওয়া হলে তিনি অনুরোধ করে বলেন, তার মানবাধিকারের প্রতি যেন সম্মান জানানো হয়। পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ লড়তে তাকে যেন আইনজীবী দেয়া হয়।

ওই কর্নেল মংকে জানান, তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। পরিস্থিতি শান্ত হলেই তাকে ছেড়ে দেয়া হবে।

মং জানান, কারাগারের অন্য ভবন থেকে বন্দিদের চিৎকারের শব্দ শুনতেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘বন্দিদের মধ্যে কয়েকজনকে অনেক বেশি নির্যাতন করা হয়। একজন আমার কক্ষে দুদিন ছিলেন। তার সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল।’

মানবাধিকার সংগঠন অ্যাসিসটেন্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্সের (এএপিপি) তথ্য অনুযায়ী, ১ ফেব্রুয়ারি ক্ষমতা দখলের পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৫ হাজার ২০০ ব্যক্তিকে বন্দি করেছে মিয়ানমারের জান্তা সরকার। এ সময়ে তাদের হাতে মৃত্যু হয়েছে কমপক্ষে ৮৮১ জনের।

এ বিভাগের আরো খবর