বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আফগানিস্তান দখলে তৎপর তালেবান, সতর্কতা জাতিসংঘের

  •    
  • ২৩ জুন, ২০২১ ১০:২৫

জাতিসংঘের আফগানিস্তানবিষয়ক বিশেষ দূত ডেবোরাহ লিয়ন্স জানিয়েছেন, সেনা প্রত্যাহারপ্রক্রিয়া চূড়ান্ত ধাপে থাকার মধ্যে হামলা জোরদার করেছে তালেবান, যা মারাত্মক পরিস্থিতির সূচনা। আফগানিস্তানে সহিংসতা বৃদ্ধির অর্থ হলো, কাছের আর দূরের অনেক দেশের জন্য মারাত্মক অনিরাপদ পরিস্থিতির সৃষ্টি।

যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহারপ্রক্রিয়া চলমান থাকার মধ্যেই আফগানিস্তানের অর্ধশতাধিক জেলার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে দেশটির সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী তালেবান।

এর মাধ্যমে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নিরাপত্তায় বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছে জাতিসংঘ।

বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়, মে থেকে এ পর্যন্ত প্রায় দুই মাসে আফগানিস্তানের ৩৭০টির মধ্যে ৫০টির বেশি জেলা দখলে নিয়েছে বিদ্রোহীরা।

আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, তালেবানের দখলকৃত এলাকাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কুন্দুজ প্রদেশে তাজাখস্তান সীমান্তের প্রধান বর্ডার ক্রসিং শির খান বান্দার।

প্রাদেশিক সরকার ও সেনাবাহিনীর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার ভোর থেকে শহর ও সীমান্তের সব নিরাপত্তাচৌকি খালি করে দিতে বাধ্য হয়েছেন আফগান সেনারা। সেখানে টহল দিচ্ছেন কয়েক শ সশস্ত্র তালেবান সদস্য।

বেশ কয়েকজন আফগান সেনাসদস্য সীমান্ত পেরিয়ে তাজাখস্তানে আশ্রয় নিয়েছেন বলেও জানানো হয়েছে।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, বিপুল পরিমাণ সামরিক সরঞ্জামও দখলে নিয়েছে তালেবান। হামলায় হতাহত হয়েছে অনেক আফগান সেনা। তালেবান সদস্যদের হতাহতের সংখ্যা স্পষ্ট নয়।

কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ কুন্দুজ ২০১৫ সালে দখল করেছিল তালেবান। এক বছর পর ন্যাটোর সহযোগিতায় সেটির নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায় আফগান সরকার।

প্রায় ২০ বছর ধরে আফগানিস্তানে মোতায়েন আছে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর কয়েক হাজার সেনা। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের আমলে তালেবানের সঙ্গে হওয়া চুক্তি অনুসারে চলতি বছরের ১ মের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে পূর্ণ সেনা প্রত্যাহারের কথা ছিল ওয়াশিংটনের।

নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্ষমতায় এসে সময়সীমা সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়ানোর পর ১ মে থেকে আফগানিস্তানে সহিংসতা নতুন মাত্রা নেয়।

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে আফগানিস্তানবিষয়ক বিশেষ দূত ডেবোরাহ লিয়ন্স জানান, সেনা প্রত্যাহারপ্রক্রিয়া চূড়ান্ত ধাপে থাকার মধ্যে হামলা জোরদার করেছে তালেবান, যা মারাত্মক পরিস্থিতির সূচনা।

তিনি বলেন, ‘আফগানিস্তানে সহিংসতা বৃদ্ধির অর্থ হলো কাছের আর দূরের অনেক দেশের জন্য মারাত্মক অনিরাপদ পরিস্থিতির সৃষ্টি।’

বিভিন্ন প্রাদেশিক রাজধানীকে ঘিরে থাকা জেলাগুলোই মূলত দখল করেছে তালেবান।

লিয়ন্সের মতে, পূর্ণাঙ্গ সেনা প্রত্যাহার হয়ে গেলেই এসব রাজধানীর নিয়ন্ত্রণ নিতে প্রস্তুত হচ্ছে গোষ্ঠীটি।

১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ৫ মাসে আফগানিস্তান ছাড়ার কথা যুক্তরাষ্ট্রের আড়াই থেকে সাড়ে তিন হাজার এবং ন্যাটোভুক্ত বিভিন্ন দেশের আরও প্রায় সাত হাজার সেনার।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন মুখপাত্র জন কিরবির দাবি, তালেবানের দৃশ্যমান তৎপরতা সত্ত্বেও আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারপ্রক্রিয়া গতিশীল আছে। কারণ, এখনও সেখানে শান্তি প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা পুরোপুরি মুছে যায়নি।

আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিভিন্ন জেলা তালেবানের দখলমুক্ত করতে অভিযান চলছে। কিছু জেলা পুনরুদ্ধারও করা গেছে।

শিগগিরই দেশজুড়ে তালেবানের বিরুদ্ধে বড় পরিসরে অভিযান শুরু করারও ঘোষণা দিয়েছেন আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর মুখপাত্র জেনারেল আজমল শিনওয়ারি।

২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে টুইন টাওয়ারসহ কয়েকটি জায়গায় একযোগে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণ যায় কয়েক হাজার মানুষের।

হামলায় জড়িত ওসামা বিন লাদেনসহ নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদার অনেক নেতাকে সহযোগিতার অভিযোগে তালেবানের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয় ওয়াশিংটন। ওই বছরই যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন বাহিনীর সহযোগিতায় আফগানিস্তানের ক্ষমতা থেকে উৎখাত হয় তালেবান।

এ বিভাগের আরো খবর