ভারতে রেকর্ড ভেঙেছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মে মাসের পাইকারি মূল্যবৃদ্ধি। টানা পাঁচ মাস বাড়তে বাড়তে এই বৃদ্ধি এসে দাঁড়িয়েছে ১২.৯৪ শতাংশে। এপ্রিল মাসে মূল্যবৃদ্ধির সূচক ছিল ১০.৪৯ শতাংশ, যা ১১ বছরে সর্বোচ্চ ছিল। ওই রেকর্ড ভেঙে মে মাসে সর্বকালীন বেশিতে পৌঁছাল মূল্যবৃদ্ধি।
উৎপাদিত পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ১০.৮ শতাংশে যা গত মাসে ছিল ৯ শতাংশে। জ্বালানি ও বিদ্যুতে গত মাসের তুলনায় মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ১৭ শতাংশ। এপ্রিল মাসে জ্বালানি ও শক্তির মূল্যবৃদ্ধি ছিল ২০.৯৪ শতাংশ, সেটাই মে মাসে ৩৭.৬ শতাংশ।
এই রেকর্ড মূল্যবৃদ্ধির জন্য দায়ী করেছে পেট্রোল ও ডিজেলের বেশি দামকে দায়ী করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বিবৃতি দিয়ে কেন্দ্র সরকার জানিয়েছে, ২০২১ সালের মে মাসে বেশি মূল্যবৃদ্ধির জন্য দায়ী ক্রুড পেট্রোলিয়াম ও মিনারেল ওয়েল অর্থাৎ পেট্রোল-ডিজেলে ন্যাপথার দাম বাড়া।
পাইকারি মূল্যবৃদ্ধি প্রসঙ্গে অর্থনীতির অধ্যাপক মহানন্দা কাঞ্জিলাল বলছেন, রাজ্য ও কেন্দ্র সরকার নির্ধারিত করের জন্যই পেট্রোল ও ডিজেলের দাম বাড়ছে। এর প্রভাব পড়ছে পাইকারি ক্ষেত্রেও।
পেট্রলের দাম বাড়ার পাশাপাশি ডিজেলের দাম বাড়ায় পরিবহন খরচ বাড়ছে। এর ফলে লাফিয়ে বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর দাম।
তিনি বলেন, ‘২০১৪ সালে পেট্রোলে কেন্দ্র শুল্ক বসাত প্রতি লিটারে ৯.৪৮ টাকা, যা ২০২০ সালে হয়েছে ৩২.৯০ টাকা। একইভাবে ডিজেলেও প্রায় প্রতি লিটারে ২৮ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। ছয় বছরে কেন্দ্রের পেট্রোল-ডিজেল থেকে কর হিসেবে আয় বেড়েছে প্রায় ৩০০ শতাংশ।’
পেট্রোল ও ডিজেলের এই বেশি দাম বাড়ার কারণেই পাইকারি মূল্যবৃদ্ধিতে এই রেকর্ড। পেঁয়াজের দাম বাড়া ছাড়া এই রেকর্ড মূল্যবৃদ্ধির বড় কোনো প্রভাব পড়েনি মে মাসের বাজারে।
অর্থনীতি বিশেষজ্ঞদের ধারণা, সঠিক সময়ে মৌসুমি বায়ু এসে যদি কৃষিকাজে উৎপাদন ঠিক হয়, তাহলে সেটি পাইকারি মূল্যবৃদ্ধিকেও ভবিষ্যতে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে।
অন্যদিকে, ভারতের পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের বক্তব্য, ‘জ্বালানির দাম ক্রেতাদের সত্যিই ছেঁকা দিচ্ছে, মানছি। কিন্তু এক বছরে করোনা টিকার জন্য ৩৫ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে। এক লাখ কোটি টাকা খরচ হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর গরিব কল্যাণ যোজনায়। কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা ট্রান্সফার করা হয়েছে। এই কঠিন সময়ে আমরা এখন জনকল্যাণমূলক প্রকল্পের জন্য অর্থ বাঁচাচ্ছি।’
মন্ত্রীর দাবি, বিরোধী শাসিত রাজ্য চাইলে কর কমিয়ে জ্বালানির দাম কিছুটা কমাতেই পারে। কেন্দ্রের কিছু করার নেই।