অসিত পুরকায়স্থ, কলকাতা
দিল্লির কৃষক আন্দোলনের প্রধান মুখ, কৃষক নেতা রাকেশ টিকায়েতের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বুধবার ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি সাংবাদিকদের বলেন, ‘কেন্দ্র কৃষকদের দাবি না মানা পর্যন্ত আমরা তাদের সঙ্গে আছি। কেন্দ্রের বিজেপি সরকার জোর করে কৃষি আইন পাস করিয়েছে। এই আইন বাতিল করতে হবে এবং ন্যূনতম সহায়ক মূল্য নিশ্চিত করে নতুন কৃষি আইন প্রণয়ন করতে হবে।’
বৈঠকে কৃষক নেতা রাকেশ বলেন, ‘পুঁজিবাদী শক্তিকে জবাব দিয়েছে বাংলা। দেশে বছরের পর বছর উন্নয়নকাজ থমকে আছে। বিজেপিকে কড়া জবাব দিয়েছেন মমতা। বাংলা যে পথে হাঁটবে, সে পথে হাঁটবে দেশ।’
মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের আরও বলেন, ‘কৃষক নেতারা চাইছেন, বিরোধী সব মুখ্যমন্ত্রীকে একত্র করে, একটি ভার্চুয়াল সভা করা হোক। সব রাজ্যকে একত্র করে আন্দোলন হোক।’
এ বিষয়ে মমতা একমত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন। কোভিড পরিস্থিতি অনুকূল হলে বিজেপিবিরোধী সব মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন তিনি।
মমতা বলেন, ‘এমন সব আইন পাস করিয়েছে কেন্দ্র, যাতে কৃষি-শিল্প সব সমস্যায়। কৃষি আইন বাতিল করুক কেন্দ্র। আইন পাস করানোর সময় কৃষকদের সঙ্গে আলোচনা করেনি সরকার। জোর করে আইন পাস করিয়েছে। এটা সাত মাসের আন্দোলন। কেবল পাঞ্জাব, হরিয়ানা বিষয় নয়; এটা কোনো দেশের বিষয়। সব রাজ্যকে একত্র করে আন্দোলন করতে হবে। আমি মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলব।’
মমতা ব্যানার্জির প্রশ্ন, যে হারে পেট্রল-ডিজেলের দাম বাড়ছে, কৃষকরা চাষবাস কী করে করবে?
কৃষক নেতা টিকায়েত বলেন, ‘বিজেপিকে ভোট দেবেন না। বিজেপি দেশের ক্ষতি করছে। মমতা দিদি বাংলাকে বাঁচিয়ে নিয়েছেন। বিজেপি থাকলে দেশ থাকবে না। বিজেপি না থাকলে দেশ বাঁচবে।’
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে রুখতে দিল্লির কৃষক নেতারা তৃণমূলের হয়ে বাংলায় প্রচার করেছেন। মোদি-শাহ জুটিকে বাংলায় ধরাশায়ী করে মমতা এখন দেশে বিজেপিবিরোধী মুখ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন।
মমতাকে আগামী সময়ে প্রধানমন্ত্রী দেখতে চেয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার শুরু হয়েছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে মমতা-টিকায়েতের এই বৈঠক তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।