করোনাভাইরাস মহামারি ঠেকাতে দেয়া লকডাউনে গত বছর প্রধানমন্ত্রীর গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনার মাধ্যমে আট মাস ধরে ৮০ কোটিরও বেশি মানুষকে বিনা মূল্যে রেশন দিয়েছিল ভারত সরকার।
এবারও মে-জুনে সেই যোজনার ঘোষণা করা হয়েছিল।
সোমবার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে গিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঘোষণা দিয়েছেন, আগামী কালীপুজো পর্যন্ত অর্থাৎ নভেম্বর মাস পর্যন্ত এই প্রকল্প চলবে। পাশাপাশি তিনি ঘোষণা দিয়েছেন ২১ জুন থেকে ১৮ বছরের বেশি বয়সীদের জন্য রাজ্যগুলোকে বিনা মূল্যে টিকা দেবে কেন্দ্র। এ জন্য টিকাও কিনে দেবে সরকার। টিকাপিছু ১৫০ টাকা পরিষেবা কর নিতে পারবে বেসরকারি হাসপাতালগুলো।
গত বছর দেশে করোনা মহামারির আঘাত হানার সময় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে এসে জনতা কারফিউয়ের ঘোষণা দিয়েছিলেন মোদি। এরপরেই সারা দেশে লকডাউন জারি করা হয়। এ সময় কার্যত স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল অর্থনীতির চাকা। তবে রোখা গিয়েছিল করোনার প্রথম ঢেউ।
এখন দেশে আছড়ে পড়েছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। মহামারির তোড়ে ভাসছে গোটা দেশ। এর মধ্যেই ২০ এপ্রিল জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন মোদি।
সেখানে তিনি বলেন, ‘লকডাউন শেষ অস্ত্র।’
এরপরে জাতীয়ভাবে আর কোনো লকডাউন দেয়া হয়নি ভারতে। তবে রাজ্যভিত্তিক লকডাউন হয়েছে। আবারও অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে দেশ।
সোমবার মোদি তার ভাষণে বলেন, রাজ্যকে টিকায় কোনো খরচ করতে হবে না। ১৮ বছরের বেশি বয়সীরা এ নিয়মে সরকারের কাছ থেকে বিনা মূল্যে টিকা পাবেন। ২১ জুন থেকে কার্যকর হবে এই নিয়ম।
সাম্প্রতিক দিনগুলোতে টিকা নিয়ে চলতে থাকা কেন্দ্র-রাজ্য সরকার বিতর্ক নিয়ে তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকার মুখ্যমন্ত্রীদের পরামর্শ ও বিরোধীদের পরামর্শ নিয়ে কাজ করেছে। যারা করোনায় বেশি আশঙ্কাজনক, তাদের আগে টিকা দেয়া হয়েছে। এ জন্যই প্রথম সারির যোদ্ধারা আগে টিকা পেয়েছেন। আপনারা কল্পনা করুন, দ্বিতীয় ঢেউয়ের আগে যদি এরা টিকা না পেতেন, তাহলে কী হতো?’
তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রের কাছে দাবি এসেছিল, স্বাস্থ্য রাজ্যের হাতে ছাড়া হোক। এ জন্য কেন্দ্র নির্দেশিকা বানিয়ে রাজ্যকে কাজ করার ছাড় দিয়েছে। করোনা কারফিউ থেকে মাইক্রো কনটেনমেন্ট জোন এই সংক্রান্ত রাজ্যের সব দাবি মেনে নিয়েছে কেন্দ্র। সবাইকে বিনা মূল্যে টিকা দিয়ে দেশ এগিয়ে যাচ্ছিল। এর মধ্যেই অনেক রাজ্য সরকার টিকার কাজ করতে চেয়েছিল।’
মোদি বলেন, ‘টিকার জন্য কেন বয়সের মাপকাঠি? বয়স্কদের টিকার প্রয়োগ আগে কেন হচ্ছে? এই বিষয়ে আলোচনা হওয়ার পর রাজ্যের দাবি ও আগ্রহকে প্রাধান্য দিয়ে টিকা প্রয়োগে বদল আনা হয়। উৎসাহকে মান্যতা দিয়ে ১ মে থেকে ২৫ শতাংশ কাজ রাজ্যের হাতে তুলে দেয়া হয়।
‘এরপর একাধিক রাজ্য বলতে শুরু করল আগের নীতিই ঠিক ছিল। যারা রাজ্যভিত্তিক টিকা করতে চেয়েছিল, তারা আবার কেন্দ্রের নিয়মে ফিরতে চাইছিল। দেশবাসীর কথা ভেবে আমরা আবার পুরোনো নিয়মে ফিরতে চাই। রাজ্যের কাছে ২৫ শতাংশ টিকার যে কাজ ছিল তা কেন্দ্র নেবে।’